চন্দ্রকোণা, 18 সেপ্টেম্বর : প্রায় দেড় মাস আগের বন্যায় ভেঙে গিয়েছে বাড়ি ৷ গৃহহীন হয়ে তখন থেকেই পাইকপাড়া প্রাথমিক স্কুলেই দিন কাটছে দুই পরিবারের । এখনও বন্যার জল না নামায় ফিরতে পারছেন না নিজেদের গ্রামে ৷ ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এখন দু‘টি স্কুলই অস্থায়ী ঠিকানা চন্দ্রকোণার অসহায় পাঁচটি পরিবারের । পরিস্থিতি খারাপের জন্য পরিবারগুলিকে আপাতত এই স্কুলে থাকতেই নির্দেশ দিয়েছেন চন্দ্রকোণা 1 নং ব্লকের বিডিও ।
দেড়মাস যাবৎ তাই গ্রামের স্কুলেই দিন কাটছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা 1 ব্লকের মনোহরপুর 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের পাইকপাড়া ও খড়কপুর গ্রামের পাঁচটি পরিবারের । বিগত একমাস আগে প্রবল বর্ষণ ও ব্যারেজের ছাড়া জলে প্লাবিত হয় চন্দ্রকোণার পাইকপাড়া ও খড়কপুর গ্রাম । প্রায় 4-5 দিন জলবন্দি ছিল গোটা গ্রাম । সেই সময় পাইকপাড়া গ্রামের স্বদেশ, স্বপন ও সুবিমল দোলুইদের কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ে ৷ গৃহহারা হয়ে বাড়ির মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে আসবাব-সহ আশ্রয় নিতে হয় পাইকপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ।
আরও পড়ুন : Waterlog : নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা
তখন থেকেই স্কুলের ভিতর একটি ঘরেই দিন কাটাচ্ছেন পাইকপাড়া গ্রামের দুটি পরিবারের 10-12 জন সদস্য । একটা ঘরে অসুবিধা হলে কখনও কখনও স্কুলের খোলা বারান্দাতেও রাত কাটাতে হচ্ছে তাঁদের ৷ একইভাবে পাশের খড়কপুর প্রাথমিক স্কুলেও রয়েছে তিনটি পরিবার ৷
জমি জায়গা বিশেষ কিছু নেই ৷ ভাগ চাষ করেই সংসার চলে এই পরিবারগুলির ৷ কিন্তু দেড় মাস আগের বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ চাষের জমিও জলের তলায় চলে গিয়েছে ৷ জল নামবে কী, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে শিলাবতী নদীর জল ঢুকে ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে ৷
বর্তমানে দিনমজুরি করে কোনওক্রমে দিন কাটলেও বাড়ি ফেরার আশায় দিন গুনছে এই সহায়সম্বলহীন পরিবারগুলি ৷ বন্যার জল নামার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা ৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্য বলতে রেশনের চাল আর দেড়মাস আগে পাওয়া কিছু খাদ্যসামগ্রী ও ত্রিপল ।
এই বিষয়ে চন্দ্রকোণা 1 ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, "দুটি স্কুলে মোট পাঁচটি পরিবার রয়েছে ৷ দেড়মাস আগে বন্যায় ওঁদের বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় থাকার কোনও জায়গা নেই, তাই স্কুলেই আছেন ওঁরা ৷ বাড়ি তৈরির জন্য সার্ভে হয়েছে ৷ টাকা এলেই ওঁরা পেয়ে যাবেন । আর স্কুলে থাকার জন্য সরকারি যা সাহায্য দরকার তা দেওয়া হচ্ছে । তবে ফের সেখানে বন্যা পরিস্থিতি হওয়ায় এখনই ওঁদের বাড়ি ফেরা সম্ভব নয় ৷ আরও কিছুদিন ওই পরিবারগুলিকে স্কুলেই থাকতে হবে ৷"
আরও পড়ুন : Ghatal : দু’মাসের মাথায় ফের জলে ডুবল ঘাটাল, রাস্তা পারাপারে নৌকাই সম্বল