ঘাটাল, 18 নভেম্বর : নার্সিংহোমের চিকিৎসার গাফিলতিতে ঘাটালে এক সদ্যোজাত শিশুকন্যার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল । নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছে মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা । যিনি এই শিশুটির চিকিৎসা করেছেন তিনি ভুয়ো বলেও অভিযোগ করা হয়েছে শিশুটির পরিবারের তরফে । ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে ।
ডেবরা থানা এলাকার চিন্ময় দাসের স্ত্রী সোমা দাসের গত শনিবার ভোররাতে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় ৷ তখন তাঁকে ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘাটালের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় । ভর্তির দু'ঘণ্টা পর নার্সিংহোমে এসে পৌঁছন চিকিৎসক ৷ এক শিশুকন্যার জন্ম দেন সোমা । সদ্যোজাত শিশুকন্যা ও মা দু'জনেই সুস্থ আছে বলেই বাড়ির লোককে জানায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ । চিকিৎসক সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখানোর কথা বলেন ।
অভিযোগ, শিশুর পরিবারের সদস্যদের মতামত না নিয়েই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ শিশু চিকিৎসক ডাকে ৷ তিনি বাচ্চাকে পরীক্ষা করে সুস্থ সবল বলেই রিপোর্ট দেন ৷ তবে তার পাকস্থলি পরিষ্কারের কথা বলেন । নার্সিংহোম কর্তৃপই শিশুর নাক দিয়ে নল ঢুকিয়ে তার পাকস্থলি পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে ৷ তাতেই শিশুটির বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় । তবে তারপর আর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ শিশুর চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করে না ৷ শুধু তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল । সেক্ষেত্রেও গাফিলতি করে তারা ৷ অক্সিজেন দেওয়ার নির্দিষ্ট মাস্কের বদলে স্যালাইনের বোতল কেটে অক্সিজেনের মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করা হয় ৷ শিশুর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় বাইকে করে শিশুকন্যাকে অক্সিজেন ছাড়াই নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে । সেখানে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় তার ৷
পরের দিন মৃত শিশুকন্যার পরিবারের লোকজন জানতে পারেন যে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ যে চিকিৎসককে দিয়ে শিশুর পাকস্থলি পরিষ্কার করিয়েছিলেন উনি প্রকৃতপক্ষে এই বিভাগের কোনও চিকিৎসকই নন । তখন মৃত শিশুকন্যার পরিবারের লোকজন ওই চিকিৎসকের পরিচয় জানতে চাইলে পরিচয় দিতে অস্বীকার করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ । তারপরই পরিবারের সদস্যরা ঘাটাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলেও পরে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট জোনে বিজয়া সম্মিলনী, পৌরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন