দাসপুর, 4 নভেম্বর: হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি গড়ে এলাকার জনপ্রিয় ইসমাইল চিত্রকর । সামনে কালীপুজো ৷ তাই ক্রেতাদের হাতে সময়মতো প্রতিমা তুলে দিতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রতিমা তৈরির কাজে চরম ব্যস্ত ইসমাইল-সহ তাঁর গোটা পরিবার ৷
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর এক নম্বর ব্লকের নাড়াজোল এলাকায় এভাবেই প্রায় 43-44 বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন ইসমাইল চিত্রকর। তাঁর বয়স যখন 16 থেকে 17, তখন থেকে বাবার হাত ধরে ঠাকুর তৈরি করা শিখেছিলেন। ইসমাইলের কথায়, "সেই থেকেই বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করে আসছি ৷ শুধু আমি না, আমরা পাঁচ পুরুষ ধরে এই কাজেই যুক্ত ।"
হাতে হাতে কাজ করে ইসমাইলকে সহযোগিতা করেন তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী । ইসমাইলের হাতে গড়া লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী ও কালী প্রতিমা পাশের ব্লক ডেবরা, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা-সহ বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি দেয় । সারা বছর এই প্রতিমা তৈরির ফাঁকে নানা পট শিল্প, মাটির তৈরি রকমারি পুতুল বিভিন্ন ধরনের রঙিন ভাঁড়- এ সবও তৈরি করেন ইসমাইল চিত্রকর । ইসমাইল জানালেন, প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় হিন্দু বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ আসে। অনেক বাড়ির পুজোয় তিনি আমন্ত্রিত হিসেবে গিয়েছেন । তবে কখনও কোথায় অনুভব করেননি ধর্মের বিভেদ ৷
আরও পড়ুন: পুজোয় জড়িয়ে মুসলমান থেকে হিন্দু ব্রাহ্মণ ও অন্ত্যজরাও, যথার্থই সম্প্রীতির শারদোৎসব মালদার ঐক্যে
এই বিষয়ে ইসমাইলের মেয়ে হাসিনা চিত্রকর জানান, "এখান থেকে প্রায় 350-400 প্রতিমা এ বছর বিক্রি করেছি । বহু হিন্দু বাড়ি থেকে নেমন্তন্ন আসে ৷ কিন্তু আমার কোথাও খুব একটা যাওয়া হয় না। একজনের বাড়ি গিয়েছিলাম ৷ তিনি এখান থেকে মূর্তি নিয়ে গিয়ে খুব খুশি হয়েছিলেন ৷"
এই নিয়ে স্থানীয় তপন সিট, রঞ্জন দে-রা বলেন, "প্রায় 40-50 বছর ধরেই ইসমাইল ঠাকুর গড়ছেন এবং সেই ঠাকুর আমরা প্রত্যেকেই সংগ্রহ করি এখান থেকে । আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই । তাঁর তৈরি ঠাকুর পূজিত হন আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতা হিসেবে ।"