ETV Bharat / state

Chandrakona : মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসার আর্জিতে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা মায়ের

প্রতিদিন মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে বের হন ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে ৷ কারণ ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ৷ সংসার টানতে হয় প্রৌঢ়াকেই ৷ ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকারি সাহায্যের আশায় রয়েছেন চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুরের বাসিন্দা ছবি পূজারী ৷

চন্দ্রকোনায় শেকলে বেঁধে রেখে ভিক্ষে করতে যান মা
চন্দ্রকোনায় শেকলে বেঁধে রেখে ভিক্ষে করতে যান মা
author img

By

Published : Sep 5, 2021, 8:09 PM IST

কুঁয়াপুর, 5 সেপ্টেম্বর : লোহার শেকল দিয়ে বাড়ির উঠানে গত দশ বছর ধরে বেঁধে রাখতে হয়েছে ৷ কারণ তা না হলে বৃদ্ধা মা ভিক্ষা করতে বেরতে পারবেন না ৷ ভিক্ষা ছাড়া আবার অন্ন সংস্থানের কোনও উপায়ও নেই ৷ তাই বছর সাতাশের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে উঠোনের খুঁটিতে বেঁধে রেখেই প্রতিদিন মা বের হন ভিক্ষা করতে ৷ বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলের চিকিৎসার জন্যও সাহায্য চান মা ৷ এমনই করুণ ছবি চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মা-ছেলের সংসারের । না মিলেছে সরকারি সাহায্য, না মিলেছে রাজনৈতিক নেতাদের দেখা ।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুরের বাসিন্দা ছবি পূজারী ৷ বছর পঁয়তাল্লিশের ছবির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল খুব অল্প বয়সেই ৷ স্বামী মারা গিয়েছেন কবে তা ভুলে গিয়েছেন ৷ তারপর থেকেই মা আর ছেলের সংসার ৷ ছেলে প্রশান্তের বয়স এখন বছর সাতাশ হবে ৷ শুরু থেকেই সে অসুস্থ ছিল না ৷ তবে গত বছর দশেক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে প্রশান্ত ৷ একচিলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে মা-ছেলের বসবাস ৷ দিন চলে ভিক্ষা করে ৷

ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করেন ছবি ৷ কিন্তু প্রধান সমস্যা তো একটাই- টাকা ৷ ভিক্ষার উপার্জনে পেটই চলে না, তো চিকিৎসা ৷ ওষুধপত্রের যে ভীষণ দাম ৷ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন ছবি ৷ তবে সাহায্য তেমন কিছুই পাননি ৷ ভিক্ষার টাকা জমিয়েই তাই চেষ্টা চালান ছেলেকে ভাল করে তোলার ৷ কারণ তাঁর বিশ্বাস, এখনও যদি চিকিৎসা করানো যায় তাহলে হয়তো ছেলে ঠিক হয়ে যাবে ৷ আর ভাবেন, যতদিন তিনি রয়েছেন ততদিন তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন ৷

ছবি বেরিয়ে গেলে আর কেউ দেখার নেই ৷ একাও ছাড়া যায় না ৷ তাই ছেলেকে শেকলে বেঁধে ভিক্ষা করতে বেরতে হয় ছবিকে ৷ সকালে খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করতে বেরিয়ে পড়েন মা । সারাদিন উঠোনে খুঁটির সঙ্গে বাঁধাই থাকেন ছেলে প্রশান্ত ৷ শৌচকর্ম থেকে যাবতীয় উঠোনেই ৷ ভিক্ষে সেরে বাড়ি ফিরে তারপর ছেলের দিকে নজর দেওয়ার সময় পান ছবি ৷ কারণ মানসিক ভারসাম্যহীন প্রশান্তের ধারে কাছে যায় না কেউ ৷

সরকারি সাহায্যের আশায় রয়েছেন ছবি পূজারী, যাতে ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে পারেন ৷

মা-ছেলের সংসারে সরকারি সাহায্য বলতে রেশনটুকু । ঝড়-বৃষ্টিতেও এই ভগ্নপ্রায় বাড়ি ছাড়া কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাঁদের ৷ আমফান-যশ সবই কেটেছে এই ঘরেই ৷ স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে কড়া নেড়েছেন ছবি ৷ কিচ্ছু পাওয়া যায়নি ৷ তবে ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকারি সহযোগিতার আশায় আছেন তিনি ৷ যদি তেমন কোনও আশ্বাস মেলে তাহলে ছেলেকে ফের ভাল করে তুলতে পারবেন বলেই তাঁর বিশ্বাস ৷

এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাক ভূমিকার ৷ যদিও তা নিয়ে ক্যামেরার সামনে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি তাঁরা ৷ তবে ওই পরিবারকে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় ব্লক আধিকারিক ।

আরও পড়ুন : শিকল ছাড়া উপায় নেই, মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের সুস্থতার আশায় পরিবার

কুঁয়াপুর, 5 সেপ্টেম্বর : লোহার শেকল দিয়ে বাড়ির উঠানে গত দশ বছর ধরে বেঁধে রাখতে হয়েছে ৷ কারণ তা না হলে বৃদ্ধা মা ভিক্ষা করতে বেরতে পারবেন না ৷ ভিক্ষা ছাড়া আবার অন্ন সংস্থানের কোনও উপায়ও নেই ৷ তাই বছর সাতাশের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে উঠোনের খুঁটিতে বেঁধে রেখেই প্রতিদিন মা বের হন ভিক্ষা করতে ৷ বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলের চিকিৎসার জন্যও সাহায্য চান মা ৷ এমনই করুণ ছবি চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মা-ছেলের সংসারের । না মিলেছে সরকারি সাহায্য, না মিলেছে রাজনৈতিক নেতাদের দেখা ।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা-2 ব্লকের কুঁয়াপুরের বাসিন্দা ছবি পূজারী ৷ বছর পঁয়তাল্লিশের ছবির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল খুব অল্প বয়সেই ৷ স্বামী মারা গিয়েছেন কবে তা ভুলে গিয়েছেন ৷ তারপর থেকেই মা আর ছেলের সংসার ৷ ছেলে প্রশান্তের বয়স এখন বছর সাতাশ হবে ৷ শুরু থেকেই সে অসুস্থ ছিল না ৷ তবে গত বছর দশেক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে প্রশান্ত ৷ একচিলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে মা-ছেলের বসবাস ৷ দিন চলে ভিক্ষা করে ৷

ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করেন ছবি ৷ কিন্তু প্রধান সমস্যা তো একটাই- টাকা ৷ ভিক্ষার উপার্জনে পেটই চলে না, তো চিকিৎসা ৷ ওষুধপত্রের যে ভীষণ দাম ৷ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন ছবি ৷ তবে সাহায্য তেমন কিছুই পাননি ৷ ভিক্ষার টাকা জমিয়েই তাই চেষ্টা চালান ছেলেকে ভাল করে তোলার ৷ কারণ তাঁর বিশ্বাস, এখনও যদি চিকিৎসা করানো যায় তাহলে হয়তো ছেলে ঠিক হয়ে যাবে ৷ আর ভাবেন, যতদিন তিনি রয়েছেন ততদিন তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন ৷

ছবি বেরিয়ে গেলে আর কেউ দেখার নেই ৷ একাও ছাড়া যায় না ৷ তাই ছেলেকে শেকলে বেঁধে ভিক্ষা করতে বেরতে হয় ছবিকে ৷ সকালে খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করতে বেরিয়ে পড়েন মা । সারাদিন উঠোনে খুঁটির সঙ্গে বাঁধাই থাকেন ছেলে প্রশান্ত ৷ শৌচকর্ম থেকে যাবতীয় উঠোনেই ৷ ভিক্ষে সেরে বাড়ি ফিরে তারপর ছেলের দিকে নজর দেওয়ার সময় পান ছবি ৷ কারণ মানসিক ভারসাম্যহীন প্রশান্তের ধারে কাছে যায় না কেউ ৷

সরকারি সাহায্যের আশায় রয়েছেন ছবি পূজারী, যাতে ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে পারেন ৷

মা-ছেলের সংসারে সরকারি সাহায্য বলতে রেশনটুকু । ঝড়-বৃষ্টিতেও এই ভগ্নপ্রায় বাড়ি ছাড়া কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাঁদের ৷ আমফান-যশ সবই কেটেছে এই ঘরেই ৷ স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে কড়া নেড়েছেন ছবি ৷ কিচ্ছু পাওয়া যায়নি ৷ তবে ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকারি সহযোগিতার আশায় আছেন তিনি ৷ যদি তেমন কোনও আশ্বাস মেলে তাহলে ছেলেকে ফের ভাল করে তুলতে পারবেন বলেই তাঁর বিশ্বাস ৷

এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাক ভূমিকার ৷ যদিও তা নিয়ে ক্যামেরার সামনে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি তাঁরা ৷ তবে ওই পরিবারকে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় ব্লক আধিকারিক ।

আরও পড়ুন : শিকল ছাড়া উপায় নেই, মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের সুস্থতার আশায় পরিবার

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.