পশ্চিম মেদিনীপুর, 17 ডিসেম্বর : শীত পড়তেই পরিযায়ী পাখির ভিড় মেদিনীপুর শহরের কাঁসাই ব্রিজ সংলগ্ন ঘাটে ৷ একশোর বেশি পরিয়াযী পাখি রাতে দুই থেকে তিন হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এখানে আসে ৷ আর নতুন পাখিদের সেন্ট্রাল এশিয়া এয়ারওয়েজের পথ চিনিয়ে নিয়ে আসে পুরানো পরিযায়ী পাখিরা ৷ কিন্তু চোরাশিকারী ও দূষণের কবলে পড়ে প্রতি বছরই কমছে এই পাখির সংখ্যা ৷
শীতকালে দুই থেকে তিন মাস মেদিনীপুর শহরে উড়ে আসে দেশ-বিদেশের পাখি । এই পরিযায়ী পাখিরা মেদিনীপুর শহরে কাঁসাই নদীর তীরে ভিড় জমায় । এইরকমই 237 টি পাখির বর্ণনা করেছেন অধ্যাপক ও পাখি বিশেষজ্ঞ সুমন প্রতিহার । পশ্চিমবঙ্গে প্রায় একশোর বেশি পরিযায়ী আসে । মূলত এই পাখিগুলো ভিড় জমায় সাঁতরাগাছির পূর্বস্থলী ,সাহেব বাঁধ ,পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে ৷ কিন্তু প্রচারের আলোর বাইরে থাকা মেদিনীপুরে বেশ ভালো সংখ্যক পরিযায়ী পাখি আসে এই কাঁসাই নদীর তীর ও ঘাটালের কিছু জায়গায় ।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রায় 90 শতাংশ পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশকে বিশ্রাম স্থান হিসাবে বেছে নেয় । এদের মধ্যে অন্যতম হল বড়সরালি ,দাগি রাজহাঁস (হিমালয়ের উপর দিয়ে ভারতবর্ষে আসে) ভুতিহাঁস ,বড় খোঁপা ডুবুরি ,মেটে রাজহাঁস, বড় দিঘার ,পিয়াং হাঁস , খুনতে হাঁস ,পাতারি হাঁস ,বালি হাঁস ,গিরিয়া হাঁস ,ছোবরা হাঁস ,চখাচখি ছাড়াও আরও পরিযায়ী পাখি । এই পাখিগুলো মেক্সিকো,রাশিয়া ,উত্তর আমেরিকা ,ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে আসে ৷ পাখিদের যাত্রা পথের রাস্তার আলো নেভানোর জন্য তৈরি হয় বার্ড কাস্টিং নামে এক ব্যাবস্থার ।
সুমন বাবু ও তার দলবল কাঁসাইয়ের তীরে হাজির হন সেইসব পাখির ছবি তুলতে ৷ বর্তমানে এই পাখিদের গতিবিধি এবং সংখ্যা কমছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সুমন বাবু । শান্ত পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে এবং মানুষের আনাগোনা ও চোরা শিকারিদের রমরমার জন্যই পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছে, বলে মত তাঁর । যদিও সরকার থেকে সংরক্ষণের এখনো ব্যবস্থা হয়নি । তাই পরিযায়ী পাখিদের বাঁচাতে সংরক্ষণের দাবি করছেন সুমনবাবুর মত পাখি বিশেষজ্ঞরা ৷