মেদিনীপুর, 14 সেপ্টেম্বর: থার্মোকল ও প্লাস্টিক বর্জন করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে মেদিনীপুর শহরের গোলকুয়াচক সর্বজনীন দুর্গোৎসবের (Golkuachak Sarbojanin Durgotsab) পুজো মণ্ডপ । এবারে তাদের পুজোর থিম 'পুজোটাই পুরো মাটি' (Durga Puja theme) । তবে অন্য কোনও কারণে পুজো মাটি নয়, মণ্ডপের সাজসজ্জা তৈরি হচ্ছে মাটি দিয়ে ৷ এছাড়াও একাধিক চমক রেখেছে উদ্যোক্তারা । সেই চমক তারা লুকিয়ে রেখেছে দর্শনার্থীদের জন্য (Durga Puja 2022) ।
এ বছর 46তম বর্ষে গোলকুয়াচক সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো ৷ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি করা হচ্ছে পুজো মণ্ডপটি ৷ হিন্দু, মুসলিম হরিজন-সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে করা হয় এই পুজো ৷
দুর্গাপুজোতে চাঁদা তোলা থেকে প্রতিমা প্রস্তুত, মণ্ডপ তৈরিতে থাকে সম্প্রীতির ছবি । যেমন, যখন পাপ্পু প্রতিমা মূর্তি তৈরি করছেন তখন অপরদিকে মোমিন তৈরি করছেন দেবীর অস্ত্রের সাজ ৷ এর পাশাপাশি সুজয় ও কাজল তৈরি করছেন মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র ৷ আর এসব কাজই চলছে একসঙ্গে বসে, দ্রুত গতিতে । কারণ হাতে সময় খুব কম । মাসখানেকও বাকি নেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে ৷
সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে প্রতি বছরই সেরার শিরোপা জিতে নেন এই পুজো কমিটি । থিম ও প্রতিমা দর্শন করতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয় গোলকুয়াচক সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজোতে । আর এখানে ভিড় জমান শুধু শহর নয়, ভিন্ন জেলার হাজার হাজার মানুষও ।
পুজো উদ্যোক্তা দীপঙ্কর সান্নিগ্রহী বলেন, "যেখানে জাতিগত ও রাজনীতিগত ভেদাভেদ সামাজিকভাবে মানুষ একে অপরের শত্রু করে তুলছে, সেখানে আমরা এই গোলকুয়াচকের মানুষজন সম্প্রীতির বার্তা দিতে দীর্ঘদিন ধরে এই পুজো করে চলেছি । এখানে মণ্ডপের জন্য কোনও শিল্পী লাগে না । সব ধর্মের মানুষ মিলে মণ্ডপ গড়ার কাজ করা হয় ৷ তেমনই প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি পুজোর আয়োজন থেকে দেবীদুর্গাকে বিসর্জন পর্যন্ত সমস্ত কাজ করে এখানকার ছেলেমেয়েরা । তাই প্রতি বছরের মতো এ বছরও আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে আমাদের চমক 'পুজোটাই পুরো মাটি' ।"
আরও পড়ুন: দর্শক টানতে ছোটবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির এবারের থিম 'বুর্জ আল আরব'
মণ্ডপের কাজে অংশ নেওয়া শেখ মোমিন বলেন, "আমাদের এখানে কোনও পুজো, মহরম বড় বা ছোট নয় । আমরা সবাই এক এবং অভিন্ন । আমাদের যেমন মহরমে হিন্দু ভাইরা আমাদের সঙ্গে থাকে ৷ তেমনই দুর্গোপজোতে আমরা প্রতিমা গড়ার কাজে থাকি ৷ পাশাপাশি পুজোতে অংশগ্রহণ করি ভাইয়ের মতো । আমাদের উদ্দেশ্য সৌভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া বিশ্বকে ।"