মেদিনীপুর, 22 ফেব্রুয়ারি: এও সম্ভব ! স্বামী থাকা সত্ত্বেও বিধবা ভাতা পাচ্ছেন স্ত্রী (wife receives widow pension)। অপরদিকে জীবিত স্বামীও বার্ধক্য ভাতা তুলে যাচ্ছেন প্রতিমাসে (Man gets old age allowance) ৷ আর তা নিয়েই এবার শোরগোল মেদিনীপুর শহরের কালগাং মালিয়াড়া এলাকায়। এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সরকারি গাফিলতির ৷
জানা গিয়েছে, মালিয়াড়া এলাকায় বাড়ি বাবলু মোল্লা ও ফুলু বিবির । তাঁদের পাঁচ ছেলেমেয়ে রয়েছে । রান্নার কাজ করেন ফুলু বিবি ৷ সরকারি নিয়ম মত স্বামী মারা গেলে স্ত্রীরা পায় বিধবা ভাতা। কিন্তু এখানে স্বামী বাবলু মোল্লা জীবিত রয়েছেন। এদিকে তিনি বার্ধক্য ভাতাও তুলছেন মাসে মাসে, তাও আবার ব্যাংক থেকে। তা সত্ত্বেও অন্যদিকে ফুলু বিবি স্বামী মারা যাওয়ার আবেদন করে বিধবা ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর ধরে । আর তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।
এ নিয়ে যদিও সরকারি উদাসীনতারই অভিযোগ করছেন সাধারণ মানুষ । কারণ একদিকে যেমন বহু মানুষ বয়স 60 বছরের উপরে হলেও সময়ে আবেদন করেও বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ৷ অপরদিকে একজন জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁর স্ত্রী কী করে বিধবা ভাতা পেতে পারেন, তাই নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন । সরকারি গাফিলতি না সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই কারসাজি, এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে এখন স্থানীয় এলাকায় ।
এ বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য নিরঞ্জন হালদার জানান, গরিব মানুষ সরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে অসুবিধায় ভুগছে ৷ সাধারণ মানুষদের জন্য বার্ধক্য ভাতায় নতুন করে আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না সরকার ৷ সেখানে এই ভুল কীভাবে হয়ে গেল, তা আমরা খতিয়ে দেখার জন্য উপরমহলে জানিয়েছি । একজন মানুষ বেঁচে থাকতে তাঁর স্ত্রী বিধবা ভাতা পাবে, এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না বলে তিনি জানান। পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, "যেহেতু এটা অনেকদিন আগেকার ঘটনা তাই আমরা বিষয়টা জানতে পেরেই অঞ্চল অফিস এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জানিয়েছি ৷"
যদিও এ বিষয়ে উলটো সুর ফুলু বিবির । তিনি বলেন, "যখন প্রথম দুয়ারে সরকারে ক্যাম্প হয়েছিল গত চার থেকে পাঁচ বছর আগে তখন আমি ও আমরা স্বামী বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করি । কিন্তু পরবর্তীকালে টাকা ঢোকে অ্যাকাউন্টে ৷ এরপর ক্রমাগত সেই টাকাই আমরা তুলেছি । কিন্তু বুঝতে পারিনি এটা বিধবা ভাতার টাকা । তবে সম্প্রতি পঞ্চায়েত থেকে এসে আমাদের বিষয়টি বলেছে ৷ আমরা পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি যে, আমাদের এই ভুলটা ঠিক করে দিতে ।" যদিও এ বিষয়ে মেদিনীপুর সদরের বিডিও সুদেষ্ণা দে মৈত্র জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি সবেমাত্র জানলেন। এবার খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন: জীবিত থেকেও সরকারি খাতায় মৃত, মিলছে না বিধবা ভাতা