ক্ষীরপাই (পশ্চিম মেদিনীপুর), 24 অক্টোবর: এই মন্দিরে মায়ের নিত্যপুজোর জন্য কোনও পুরোহিত নেই ৷ কারণ, 'নিজের পুজো নিজে করা'ই এই মন্দিরের নিয়ম ! আমরা বলছি, পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ের (Khirpai) বড় মায়ের মন্দিরের (Baro Maa Kali Temple) কথা ৷ এ এক এমন মন্দির, যা দেখলে কারখানা বলে ভ্রম হয় ! কেন মন্দিরের এমন চেহারা ? কেনই দেবী কালীকে এখানে 'বড় মা' বলে সম্বোধন করা হয় ?
20 বছর আগে মায়ের এই প্রতিমা এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শুদ্ধদেব রায় ৷ এই কালী মূর্তির বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে ৷ প্রথমত, এর আয়তন ৷ বড় মায়ের প্রতিমার উচ্চতা পাক্কা 45 ফুট ৷ ফলে প্রথম দেখায় ভক্তির সঙ্গে অনেকেই ভয়ও পান ! দ্বিতীয়ত, এই প্রতিমা তৈরি হয়েছে কংক্রিট দিয়ে ! দেবী মূর্তি তৈরির ক্ষেত্রে যা খুবই ব্যতিক্রমী একটি উপাদান ৷ তৃতীয়ত, চতুর্ভূজা দেবীর এক হাতে রয়েছেন মা ধরিত্রী, অন্য হাতে সাদা পায়রা ৷ অর্থাৎ মা এখানে জগৎ জননী ৷ তিনি শান্তির বার্তা দেন ৷ এই মা-ই আবার দুষ্টের দমনে ব্রতী ৷ তাই তাঁর বাকি দুই হাতে রয়েছে নরমুণ্ড ও খড়্গ ৷
আরও পড়ুন: মা মাটিয়া কালী থাকেন মাটিতে, তাই জমিদারও শয়ন করতেন মাটিতেই !
প্রতিমার বিরাট আয়তনের জন্যই কারখানার আকৃতি বিশিষ্ট টিনের ছাউনি দেওয়া মন্দিরে বড় মায়ের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ রোজ দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এই মন্দিরে আসেন ৷ নিজেদের সাধ এবং সাধ্য মতো মায়ের পুজো করেন ৷ তারপর ফিরে যান ৷ তবে, এখানে কোনও প্রণামীর বাক্স নেই ৷ বস্তুত, এই মন্দিরে প্রণামী দেওয়াও মানা !
তবে, নিত্যপুজো ভক্তরা করলেও প্রতি অমাবস্য়ায় যাবতীয় রীতি মেনে একজন পূজারি মায়ের পুজো করেন ৷ পুজোয় ভোগ, প্রসাদ থাকলেও বলি নিষিদ্ধ ৷ কালীপুজোর সময় পুজো ঘিরে সারা এলাকায় সাজো সাজো রব পড়ে যায় ৷ পরদিন সকলকে খিচুড়ি ভোগ বিলি করা হয় ৷ সেই ভোগ পেতে রীতিমতো লাইন পড়ে যায় ৷
এই পুজোয় তেমন কোনও জাঁকজমক নেই ৷ কিন্তু, এর স্বাতন্ত্র্য সকলের নজর কাড়ে ৷ গত দু'বছর করোনার কারণে কালীপুজোর রোশনাইও ম্লান হয়ে গিয়েছিল ৷ তবে, এবার ফের একবার পুজো (Kali Puja 2022) উপলক্ষে উৎসবের আসর বসবে মন্দির ঘিরে ৷ অপেক্ষার প্রহর গুনছে ক্ষীরপাই ৷