মেদিনীপুর, 19 নভেম্বর: পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী (Health Worker) অভিনন্দন মুখোপাধ্য়ায়ের নেশা বই ৷ পড়তে ভীষণ ভালোবাসেন তিনি ৷ আর সেই টানেই কিনে চলেছেন একের পর এক বই ৷ বর্তমানে তাঁর সংগ্রহে প্রায় হাজার খানেক বই রয়েছে ৷ সেইসব বই জমিয়ে বাড়িতেই তৈরি করেছেন আস্ত একটি লাইব্রেরি (Library) ৷ ব্যক্তিগত সেই গ্রন্থাগার সাজিয়ে তুলেছেন রকমারি আলোর সাজে ৷ আগামী দিনে অন্তত 10 হাজার বইয়ের একটি পাঠাগার তৈরি করার ইচ্ছা রয়েছে মেদিনীপুরের (Medinipur) বাসিন্দা এই যুবকের ৷ তাঁর পরিকল্পনা, বাড়ির লাইব্রেরিতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে বই পড়ার ব্যবস্থা করবেন ৷ সঙ্গে থাকবে বিনামূল্যের ওয়াইফাই পরিষেবা (Free WiFi Service) ৷ থাকবে কম্পিউটার ব্যবহারের সুবিধা ৷
শুরুটা হয়েছিল 2009 সালে ৷ সেবারই প্রথম বইমেলা থেকে খানকয়েক বই কিনেছিলেন অভিনন্দন ৷ তারপর থেকে বই দেখে পছন্দ হলে আর পকেটে রেস্ত থাকলেই তা কিনে ফেলেন তিনি ৷ গল্প, কবিতা, ছড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের রন্ধন প্রণালী, অভিনন্দনের সংগ্রহে নানা ধরনের বই রয়েছে ৷ রয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, সুকান্ত মজুমদারের মতো কিংবদন্তিদের অমর সব সৃষ্টি ৷ একইসঙ্গে, অভিনন্দনের লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে অখ্যাত, উঠতি লেখকদের নানা রচনাও ৷
আরও পড়ুন: 2013 থেকে হয়নি স্কুল লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ, বন্ধ হওয়ার পথে বহু লাইব্রেরি
অভিনন্দনদের চারজনের পরিবার ৷ তিনি ছাড়াও রয়েছেন তাঁর বাবা, মা ও স্ত্রী ৷ অভিনন্দনের কর্মস্থল মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য ভবন ৷ স্বাস্থ্য ভবনের স্টোরে কাজ করেন তিনি ৷ কাজ বাদে বাকি সময়টার অধিকাংশই কাটান নিজের বাড়ির লাইব্রেরিতে ৷ এছাড়াও ভালোবাসেন গান গাইতে ৷ অবসর সময় বিভিন্ন ব্যান্ডে গান গেয়ে বেড়ান তিনি ৷
অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা যাতে তাঁর লাইব্রেরিতে আসে, সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে সেই বার্তা দেওয়ারই চেষ্টা করেছেন অভিনন্দন ৷ কিন্তু, তাঁর আক্ষেপ, এখনকার ছোটদের অধিকাংশেরই বই নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই ৷ তাদের যত ঝোঁক, সবই আটকে থাকে হাতের স্মার্ট ফোনে ৷ তবে, বিনামূল্যে ভালো বই পড়ার সুযোগ পেলে হয়তো তারাও একটা সময় নিয়মিত আসা শুরু করবে ৷ এই আশাতেই নিজের লাইব্রেরির দরজা সকলের জন্য খুলে দিয়েছেন অভিনন্দন ৷