বেলপাহাড়ি, 12 এপ্রিল : 5 এপ্রিল রাত 9টায় নয় মিনিটের জন্য বাড়িতে বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ জ্বালাতে দেশবাসীকে আহ্বান জ্বানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের স্বার্থে মানুষকে একবিন্দুতে নিয়ে আসার জন্যই ছিল তাঁর এই আবেদন । তবে তাঁর বক্তব্যে হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে আলো নেভানোর কথার উল্লেখ ছিল না । তা সত্ত্বেও ওইদিন ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালানোয় কর্তৃপক্ষকে শো-কজ় করে স্বাস্থ্যবিভাগ । আর এই শো-কজ়কে দুর্ভাগ্যজনক বলে টুইটে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল ।
ভারতে কোরোনায় আক্রান্তর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে । দেশের এই সংকটকালে নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা । প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান মতো ওইদিন বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ, মালায় সাজিয়েছিল হাসপাতাল চত্বর । সেই ছবি প্রকাশ হয় সোশাল মিডিয়ায় । আর তারপরে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসারকে শো-কজ় নোটিস দেন ঝাড়গ্রামের স্বাস্থ্য অধিকর্তা । এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ।
যদিও রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, প্রধানমন্ত্রী আলো নেভাতে বলেছিলেন বাড়িতে । কিন্তু হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবার মতো জায়গায় কীভাবে আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়? কোনও সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের কর্মসূচি পালনের নির্দেশ না থাকা সত্ত্বেও বেলপাহাড়ি হাসপাতালে কর্মীরা তা পালন করেন কীভাবে?
তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে ওইদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন 32জন রোগী । তার মধ্যে তিন সদ্যোজাত ও ছয়জন প্রসূতিও ছিলেন । তবুও রবিবার রাত 9টা বাজতেই নয় মিনিটের জন্য আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে । ভবন সাজাতে প্রদীপ, মোমবাতিও জ্বালানো হয় । এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তীর্থ প্রসাদ চক্রবর্তীকে । জানতে চাওয়া হয় কার নির্দেশে আলো নেভানো হল? কেইবা মোমবাতি ,প্রদীপ বাবদ অর্থ খরচ করল? একই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়, কার অনুমতিতে সেই ছবি, ভিডিয়ো তোলা হয়েছে ? বৃহস্পতিবার পাঠানো এই নোটিসের জবাব 24 ঘণ্টার মধ্যে দিতে বলা হয় স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে ।
যদিও BMOH উত্তম মাণ্ডি ও মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য় করতে রাজি হননি ।
শুক্রবার শোকজ় নোটিসের ছবি টুইটারে পোস্ট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । রাজ্যপাল বলেন, এই কারণ দর্শানোর নোটিস দুর্ভাগ্যজনক । তাঁর মতে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকে এই কর্মসূচির বিরোধিতা করছে । প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতো একসঙ্গে একতার প্রতীক হিসেবে এই মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালানোয় কেন শোকজ় করা হল সেই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল । পাশাপাশি তিনি টুইটে ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন ।