বেলদা, 2 সেপ্টেম্বর : যুদ্ধবিমানের ওঠা-নামার জন্য আপৎকালীন রানওয়ে তৈরির তৎপরতা দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায় ৷ বেলদার বাখরাবাদের 60 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে তারই প্রস্তুতি চোখে পড়ল ৷
ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনার আবহেই যুদ্ধ বিমান ওঠা-নামার সুবিধার্থে তৈরি হতে চলেছে নতুন রানওয়ে । জরুরিকালীন অবস্থায় অতি সহজেই যুদ্ধবিমান নামানো যাবে । ভারতীয় বায়ুসেনা এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে বেলদা থানার বাখরাবাদ থেকে পোস্তাপুল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটারব্যাপী 60 নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তৈরি হচ্ছে আপৎকালীন যুদ্ধ বিমান ওঠা-নামার ব্যবস্থা । ইতিমধ্যে এজন্য 60 নম্বর জাতীয় সড়কের দু'দিকে থাকা বড় গাছগুলিকে কেটে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে । চলছে মাপ নেওয়ার প্রক্রিয়া ।
ভারত-পাকিস্তান কিংবা ভারতীয়-চীন সীমান্ত এলাকাগুলিতে যখন উত্তেজনার পারদ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সময় দেশের ভিতরে মোট তেরোটি জায়গায় এই আপৎকালীন যুদ্ধ বিমান ওঠা-নামার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে । এজন্য জাতীয় সড়কের প্রস্তাবিত এলাকার দু'দিকে প্রায় 30 মিটার মতো জায়গা বৃদ্ধি করা হচ্ছে । জাতীয় সড়কের মাঝখানে যে অংশে ফুলের চারা লাগানোর জন্য নির্ধারিত ছিল সেগুলিও সম্পূর্ণ ভরাট করে এই আপৎকালীন রানওয়ে তৈরি হবে । 5 কিলোমিটারব্যাপী জাতীয় সড়কে তৈরি হওয়া রানওয়ের মধ্যে থাকবে স্বয়ংক্রিয় কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।
প্রস্তাবিত এলাকায় বহু আগে এই পরিকল্পনা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা আটকে ছিল । সূত্রের খবর, সীমান্ত এলাকার উত্তেজনার পারদ যখন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে সেদিকের কথা ভেবে ও আপৎকালীন অনেক দেশীয় সুযোগ সুবিধার জন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে । এছাড়াও যে সকল স্থানে এয়ারবেস ইতিমধ্যে রয়েছে তার প্রায় কাছাকাছি অঞ্চলে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে । বেলদা থেকে কিছুটা দূরেই খড়গপুরের সালুয়ায় রয়েছে এয়ার বেস ক্যাম্প ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের বাখরাবাদ এলাকায় এই ধরনের আপৎকালীন যুদ্ধ বিমান ওঠা-নামার ব্যবস্থা চালু হওয়ার খবরে খুশি এলাকাবাসীও । এলাকাবাসীর আগ্রহ চোখে পড়ার মতো । সার্ভে ডিপার্টমেন্টের আধিকারিক বলেন, "জরুরিকালীন যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য এই রানওয়ে তৈরির কাজ চলছে । ভারতের মোট 13টি জায়গায় এই ধরনের রানওয়ে হবে । যেখানে জরুরিকালীন সময় যুদ্ধ বিমান ওঠা-নামা করবে । আমরা সেই পরিকল্পনামাফিক সার্ভের কাজ করছি। এই বিমান ওঠা-নামার সময় দরকার হলে জাতীয় সড়কের দু'পাশে যানবাহনকে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে । তারপর উঠে গেলে তাদের আবার যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হবে । মূলত জরুরিকালীন অবস্থার জন্য এই ধরনের পরিষেবা পশ্চিম মেদিনীপুরের একমাত্র এখানে হচ্ছে ।" জাতীয় সড়ক আধিকারিক সারমান রায় বলেন, "আমাদের যে নির্দেশ এসেছে সেই নির্দেশ মোতাবেক আমরা কাজ করছি । মূলত জরুরিকালীন অবস্থায় এয়ার ফোর্সের যুদ্ধবিমান ওঠা-নামার জন্য এই ধরনের রানওয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে । যা দেশের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক । সেই অনুসারে এখন চলছে সার্ভে এবং তার আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম ।"