শালবনি, 26 নভেম্বর : ফের হাতির মৃ্ত্যু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শালবনি থানার শুশনিবাড়ির জঙ্গলে ৷ গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিল পূর্ণবয়স্ক ওই হাতিটি ৷ মূলত পায়ের চোট থেকেই এই মৃত্যু ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ৷
শুশনিবাড়ির জঙ্গলে গত বেশ কয়েকদিন ধরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল হাতিটিকে ৷ হাতিটিকে দেখে ডান পায়ে চোট আছে বলে অনুমান করেন এলাকার বাসিন্দারা ৷ গ্রামবাসীরা কয়েকদিন ধরে হাতিটিকে জঙ্গলের ভেতরে খাবারও দিয়ে আসছিল ৷ শেষের দিকে হাতিটি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলে খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হাতিটির অসুস্থতার কথা বনদপ্তরকে জানানোর পরেও সঠিক সময়ে চিকিত্সা হয়নি ৷ আজ দুপুরে মৃত অবস্থায় হাতিটিকে দেখতে পায় এলাকার বাসিন্দারা ৷
এলাকার বাসিন্দা কালীপদ সোরেন হাতি মৃত্যুর ঘটনায় বলেন, "এই হাতি গত কয়েকদিন ধরে আহত অবস্থায় ঘোরাফেরা করছিল এখানে ৷ এই জঙ্গলের মধ্যেই ঘোরাফেরা করত ৷ আমরা এই হাতিটিকে দেখতে পেয়ে হাতির খাওয়ার ব্যবস্থাও করেছিলাম ৷ আমাদের গ্রামের বেশ কিছু যুবক কলাগাছ কেটে হাতিটির কাছে দিয়ে এসেছিল খাওয়ানোর জন্য ৷ কিন্তু ও খায়নি ৷ আজ সকাল অবধি দেখেছি ও ঠিক ছিলস কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখি হাতি মরে পড়ে রয়েছে ৷ আমরা বনদপ্তরকে বহুবার জানিয়েছি অসুস্থতার কথা, কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷"
জেলার DFO সন্দীপ বেরেয়াল বলেন," আমরা খবর পাওয়া মাত্রই মেডিক্যাল টিমকে খবর দিই ৷ আজই হাতিটির চিকিত্সা হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু তার আগেই দেখি মারা গেছে ৷ অনুমান করা হচ্ছে, হাতিটি কোথাও আহত হয়েছিল ৷ হাতি আহত হয় মূলত জঙ্গলের মধ্যে নিজেদের এলাকা দখল রাখতে ৷ তবে আমরা তদন্ত না করে এর সঠিক কারণ বলতে পারছি না ৷ আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখে বলতে পারব হাতিটির মৃত্যুর কারণ ৷"
এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড় রেঞ্জের আজনাশুলিতে রয়েছে 20-22 টি হাতি ৷ চাঁদড়া রেঞ্জের বালিছুড়াতে ও আড়াবাড়ি রেঞ্জের টুংনিতে রয়েছে 2 টি করে হাতি ৷ এছাড়া ভাদুতলা রেঞ্জের খাসজঙ্গল ও নয়াবসত রেঞ্জের উখলাতে রয়েছে 1টি করে হাতি ৷
দিনকয়েক আগেই গড়বেতায় একটি হাতির শাবকের মৃত্যু হয় ৷ সেই ঘটনায় বনদপ্তর জানিয়েছিল হাতিশাবক জল খেতে গিয়ে মারা যায় ৷ বছরখানেক আগে নেপুরাইতে দুটি হাতি বৈদ্যুতিক শক খেয়ে মারা গিয়েছিল ৷ বারবার হাতি মৃত্যুর ঘটনায় আঙুল উঠছে বনদপ্তরের দিকে ৷ কেন বনদপ্তর সঠিক পরিষেবা দিতে পারছে না, সে নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন ৷