গড়বেতা, 23 জুন: শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে দিনরাত লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত নিজের গ্রামে নিজের বুথেই প্রার্থী দিতে পারলেন না সুশান্ত ঘোষ। যদিও প্রার্থী না দেওয়ার অযুহাত হিসাবে সুশান্ত ঘোষের দাবি, সংরক্ষিত আসন হওয়ার জেরে চটজলদি প্রার্থী মেলেনি ৷ যদিও সুশান্ত ঘোষের এই ব্যাখ্যার পালটা খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল ৷ বামেদের উপর মানুষের ভরসা নেই বলে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসক দল।
যেখানে বিরোধীরা বারবার দাবি করেছিল, যে তারা এবার বহু জায়গায় প্রথমেই 60 শতাংশ মনোনয়ন দিতে পেরেছে, সেখানে খোদ সিপিএমের একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা খোদ নিজের বুথেই প্রার্থী দিতে পারলেন না ৷ আর তা নিয়েই জেলায় শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। কেন প্রার্থী দিতে পারল না সিপিএম, তা নিয়েও বক্তব্য রেখেছেন এই সিপিএম নেতা। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বামেদের রাজ্য শাসনকালে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাও ছিল দুষ্কর। লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল কেশপুর, গড়বেতা ও শালবনি এলাকা। এই এলাকায় বামেরা একছত্র আধিপত্য চালিয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন এই এলাকার তৎকালীন শাসক দলের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। কিন্তু পরিবর্তনের পরই তাঁর এলাকা থেকে কঙ্কাল কাণ্ড রহস্য ঘনীভূত হয়। এই ঘটনায় সুশান্ত ঘোষকে বেশ কয়েক বছর জেলও খাটতে হয়েছে। গত বিধানসভার ভোটে লড়াই করে অবশ্য তিনি জিততে পারেননি ৷ আর পঞ্চায়েত ভোটে সেখানেই এবার প্রার্থীই খুঁজে পেল না সিপিএম।
বর্তমানে সিপিএমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ তাঁর এলাকা বেনা চাপড়ায় এবারে প্রার্থী দিতে পারল না পঞ্চায়েতে। আর তা নিয়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। মূলত সুশান্ত ঘোষের নিজের গ্রাম গড়বেতার বেনাচাপড়া গ্রামে, আর সেই গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে নেই কোন সিপিএম প্রার্থী। এই ঘটনায় সুশান্ত ঘোষের দাবি সেটি সংরক্ষিত আসন ছিল, শংসাপত্রের জটিলতায় প্রার্থী সংকট তৈরি হয়েছিল। তাই গ্রাম পঞ্চায়েতের শেষ মুহুর্তে প্রার্থী দিতে পারেনি শাসকদল। তিনি এও দাবি করেন, "এমন অনেক স্থানেই হয়েছে আমাদের।" অন্যদিকে প্রার্থী না দেওয়ার ঘটনায় কটাক্ষ করেছে শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি পালটা, মানুষ আজও সিপিএমকে ভরসা করতে পারছে না ৷ আর তাই তাদের প্রার্থী সংকট তৈরী হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কণ্ঠে হতাশার সুর ?
তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "দিলীপ ঘোষ থেকে সুশান্ত ঘোষ, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যত বেশি বিষোদগার করবেন, মানুষ তত বেশি ওদের অপছন্দ করবে। ওদের পাশে দাঁড়াবার কেউ নেই বলেই ওরা নিজের এলাকাতেই প্রার্থী দিতে পারেনি। আমরা কোথাও কাউকেই বাধা দিইনি ৷ বরং বলেছি কেউ যদি প্রার্থী দিতে গিয়ে সমস্যা পড়েন, আমাদের জানান তাহলে আমরা সহযোগীতা করব।" উল্লেখ্য, এর আগে দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রামে খোদ দিলীপ ঘোষের নিজের গ্রামেই বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমও নিজের গ্রামে প্রার্থী দিতে পারেনি। এবার সেই তালিকাতে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের নাম জুড়ল।