চন্দ্রকোনা, 2 জুলাই: দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়ের পর এ বার আইএসএফ ও তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত পশ্চিম মেদিনীপুর ৷ চন্দ্রকোনা কৃষ্ণপুরে দু পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের 10 জন জখম হয়েছেন ৷ গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন 5 জন ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী । তৃণমূলের অভিযোগ, আজ সকালে তৃণমূলের এক প্রার্থী কৃষ্ণপুর এলাকায় প্রচার করতে যাওয়ার সময়, তাঁদের উপরে অতর্কিত হামলা চালান আইএসএফ কর্মীরা । আর এর থেকেই ঘটনার সুত্রপাত। তবে আইএসএফ-এর অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা একত্রিত হয়ে তাদের উপর হামলা চালায় ।
ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ । সেই তালিকায় এ বার সংযোজন হল চন্দ্রকোনার ৷ আগামী 8 জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন । শেষবেলায় ভোটের প্রচারে আজ উত্তপ্ত হয়ে উঠল চন্দ্রকোনা ৷ এ দিন সংঘর্ষ বাঁধে আইএসএফ ও তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে । জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে উভয় দলই প্রচারে বেরিয়েছিল । প্রথম দিকে চন্দ্রকোনা কৃষ্ণপুরে উভয়েই প্রচার চালাচ্ছিল ৷ কিন্তু দু দলের সমর্থকরা মুখোমুখি হতেই কথা কাটাকাটি ও বাক-বিতণ্ডা শুরু হয় ৷ শেষে তা গড়ায় হাতাহাতিতে ।
আইএসএফ-এর অভিযোগ, শাসকদলই তাদের উপর প্রথম আক্রমণ শানায় ৷ তার পালটা আঘাত করে নওশাদ সিদ্দিকীর দলের ছেলেরা ৷ এই ঘটনায় আইএসএফ-এর বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তাদের অভিযোগ, আজ সকালে এক তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণপুর এলাকায় প্রচার করতে যাওয়ার সময়, তাঁদের উপরে অতর্কিতে হামলা চালান আইএসএফ সমর্থকরা । তার থেকে ঘটনার সূত্রপাত ।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সফরকালে উত্তপ্ত গিতালদহ ! বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম 6
এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে 10 জন আহত হন ৷ যাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা আশংকাজনক । আহতদের চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । ঘটনাস্থলে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী । গোটা এলাকা থমথমে হয়ে রয়েছে ৷ এই ঘটনার পরই এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় ৷ এলাকায় পুলিশি টহল চলছে ৷
আহত তৃণমূল কর্মী মুনতাজ সরকার বলেন, "আমরা প্রার্থীকে নিয়ে সকাল সকাল প্রচারে যাওয়ার জন্য পার্টি অফিসের সামনে চায়ের দোকানে হাজির হই । ঠিক তখনই আইএসএফ এবং সিপিআইএম কর্মীরা অতর্কিতে 20-30 জন মিলে আমাদের উপর হামলা চালায় । মোটা বাঁশ নিয়ে তাড়া করে আমাদের মারধর করে । আমরা যত বলি কোনও অশান্তি চাইছি না, ততই ওরা মারধর করে । আমরা ওদেরকে হটাতে যাই । কিন্তু ওরা আমাদের কর্মীদের মেরে আহত করে দেয় ।"
অন্যদিকে, সিপিআইএম নেতা সুস্মিত পাল এই ঘটনায় দোষ চাপিয়েছেন তৃণমূলের উপর । তিনি বলেন এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত । কারণ এর আগে বিধায়ক স্বয়ং বলেছিলেন, এখানে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলের প্রচার করা যাবে না, অন্য কারও পতাকা উড়বে না । আর তাই আজকে ভগবন্তপুরের 1 নম্বর অঞ্চলে কৃষ্ণপুরে যখন নিজেদের প্রার্থী নিয়ে আইএসএফ এবং সিপিআইএম প্রচার শুরু করেছিল, তখনই শাসক দলের লোকজন অতর্কিতে হামলা চালায় । কর্মীদের পাশাপাশি প্রার্থীকেও মারধর করা হয় । তৃণমূল এলাকা জুড়ে এই ধরনের সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি । গোটা ঘটনা পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর ৷