মেদিনীপুর, 4 ডিসেম্বর : পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গল অধ্যুষিত প্রত্যন্ত এলাকায় স্ক্রাব টাইফাসের আতঙ্ক ৷ জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা জানান, এই মুহূর্তে মোট আক্রান্তের সংখ্যা 400 জনের বেশি ৷ যদিও তাঁর দাবি সঠিক সময় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে তাই এখনও পর্যন্ত জেলায় কেউ মারা যায়নি ৷
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অজানা জ্বরের সঙ্গে বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাসের দাপট । পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও এর দাপট অব্যাহত । বিশেষ করে জেলার শালবনি, ভাদুতলা, গড়বেতা 1 ,2 ও 3 নম্বর ব্লক এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি । মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই মুহূর্তে ভরতি রয়েছে প্রায় 400 জনের বেশি ৷ প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিন-চারজন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত রোগী ভরতি হচ্ছেন হাসপাতালে । ইতিমধ্যেই রাজ্যের নির্দেশিকা মতো জেলাস্তরে এর মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে । এলাকায় এলাকায় ক্যাম্প করা হচ্ছে ৷ সতর্ক করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে ৷ পাশাপাশি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ একদিকে ডেঙ্গি, অজানা জ্বর অন্যদিকে স্ক্রাব টাইফাস এই ত্রিমুখী আক্রমণে প্রায় নাজেহাল জেলাবাসী ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, কখনও ঠান্ডা, কখনও গরম, আবহাওয়ার এই আকস্মিক পরিবর্তনের জন্যই জেলায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে ৷ তাদের পরামর্শ, যারা জঙ্গলে কাজ করতে যায়, তারা যেন ফুলহাতা জামা এবং ফুল প্যান্ট পরে যায় ৷ ঘুমনোর সময় মশারি ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে ৷ মাটিতে শুতে নিষেধ করা হচ্ছে ৷
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা জানান, অন্য জেলার মতো পশ্চিম মেদিনীপুরেও মানুষ স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হচ্ছে ৷ কয়েক মাস ধরেই দেখা যাচ্ছে অনেকেই আসছেন জ্বর, মাথা ব্যাথা এবং গায়ে র্যাশ নিয়ে ৷ চিকিৎসকদের প্রথমদিকে সন্দেহ হয় ৷ পরে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আক্রান্তদের বেশীরভাগেরই স্ক্রাব টাইফাস হয়েছে ৷ প্রথম থেকেই বিষয়টা ধরা পড়ার কারণে চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়নি ৷ এখনও পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় 400 জনের বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ৷ তবে চিকিৎসা সময়মতো শুরু হওয়ায় সকলেই ভালো আছে ৷ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ৷ তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ তবে জেলাবাসীকে আরও সতর্ক হতে হবে ৷ বাড়িতে মেঝেতে না শুয়ে একটু উঁচু জায়গায় শোবার ব্যবস্থা করতে হবে । জঙ্গলে কাজ করতে যাওয়ার সময় ফুলহাতা জামা এবং ফুল প্যান্ট পরে যেতে হবে ৷ ঘরের আশপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ৷ যাতে স্ক্রাব টাইফাস বহনকারী পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা কমে ৷ তিনি আরও বলেন, "আমরা বিভিন্ন জায়গায় সতর্কতামূলক বিভিন্ন ক্যাম্প করছি ৷ বিশেষ করে শালবনি গড়বেতা এবং চন্দ্রকোণা এলাকায় । আমরা ক্যাম্প চালিয়ে যাচ্ছি মানুষকে বোঝাচ্ছি এবং সতর্ক করছি ৷ পাশাপাশি প্রয়োজন মতো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে ৷ যদিও জেলায় এখনও পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি ৷ "