কেশপুর, 20 অক্টোবর : শ্বশুরকে বিষ খাইয়ে মারার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে ৷ ঘটনা কেশপুর থানার অন্তর্গত কলাগ্রাম অঞ্চলের আখরাপোতা গ্রামের ৷ মহিলার স্বামী শেখ পারবেসের অভিযোগ, অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে প্রায় 19 মাস বাইরে থাকার পর শাসক দলের মদতে বাড়ি ফিরে এসে তাঁর বাবাকে বিষ ওষুধ খাইয়ে মেরেছেন স্ত্রী ৷ এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্য়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ব্য়ক্তি ৷
শেখ পারবেস আলি ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বাড়ির বউয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের ৷ শেখ পারবেস জানিয়েছেন, তাঁর বাবা শেখ ইসলাম আলিকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছেন তাঁর স্ত্রী সাকিনা খাতুন। গত শুক্রবার রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শেখ ইসলাম আলিকে ৷ রবিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
পারবেস জানিয়েছেন, কাজের তাগিদে দীর্ঘদিন বাড়ির বাইরে ছিলেন তিনি। সেই সুযোগে কেশপুর থানার শাকপুরের বাসিন্দা সেক সেরাজুল আলির সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাঁর বাড়িতেও যাতায়াত ছিল সেরাজুলের। প্রায় দু'বছর আগে পারবেসের 7 বছরের ছেলে তাঁর মা ও সেরাজুলকে বাড়ির মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে । অভিযোগ, তারপরই সাকিনা খাতুন তাঁর ছেলেকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করেন । সেই সময় পারবেসের মা তা দেখে ফেলেন এবং কোনো রকমে সাকিনার হাত থেকে তাঁর নাতিকে ছাড়িয়ে নেন । পরবর্তী সময়ে পারবেসের স্ত্রী তার প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান । দীর্ঘ 19 মাস বাদে সাকিনা ফিরে আসেন গ্রামে এবং ভুল স্বীকার করে পারবেসের সঙ্গে থাকতে চান। তখন পারবেস তাঁর স্ত্রীকে সেরাজুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে বলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি পারবেসের স্ত্রী।
আরও পড়ুন : Four Die in Accident : ট্রাকের সঙ্গে টোটোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, পূর্ব বর্ধমানে মৃত 4
পারবেসের আরও অভিযোগ এরপরই তাঁর স্ত্রী সাকিনার বাপের বাড়ির লোকজন এবং স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সেরাজুলের যোগসাজসে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাজী সাহাদাত, বুথ সভাপতি শেখ মজু আলি-সহ শাসকদলের স্থানীয় নেতারা নানা ভাবে অত্যাচার শুরু করে পারবেসের পরিবারের উপর। সামাজিক বয়কট,বাড়ির বাইরে বেরতে না দেওয়া, বাড়ির উঠোনে থাকা ফলের গাছ কেটে নেওয়ার পাশাপাশি হুমকি এমনকি মারধরও করা হয় পারিবারের সদস্যদের। বিষয়টি কেশপুর থানায় লিখিতভাবে জানাতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে জানিয়েছেন পারবেস। যদিও অভিযুক্ত তৃনমূল নেতা কাজী সাহাদাত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইতিমধ্যেই তিনি মেদিনীপুর আদালতে স্ত্রী সাকিনা খাতুন ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পারবেস। চিঠি পাঠিয়ে কেশপুর থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি ৷ তারপরও শাসকদল তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব কাজী সাহাদাত, শেখ আজব আলি, শেখ হাসমত আলি, শেখ মজু আলি-সহ অন্যরা জোর করে পারবেসের স্ত্রীকে পারবেসের বাড়িতে নিয়ে যান ও পারবেসের মা ও বাবাকে নানা ভাবে শাসানোর চেষ্টা করেন ৷ বারেবারে পরিবারের উপর অত্যাচারের বিষয়ে কেশপুর থানার ওসিকে জানানো হলেও, উল্টে ওসি পারবেসকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পারবেসের স্ত্রী সাকিনা পানীয় জলে মধ্যে বিষ মিশিয়ে শশুর সেক ইসলাম আলিকে খাইয়ে দেন বলে অভিযোগ। এরপর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়৷ এই ঘটনার পর একপ্রকার অসহায় অবস্থায় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন পারবেস। দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তিনি ৷