চন্দ্রকোনা, 3 জুলাই: যে এলাকায় দিনেরবেলায় নির্বাচনী প্রচারকে কেন্দ্র করে পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল সেই এলাকাতেই সন্ধ্যেবেলায় দেখা গেল অন্য ছবি ৷ শাসক দলের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় 6 জন বাম ও আইএসএফ প্রার্থী-সহ শতাধিক কর্মী যোগদান করলেন তৃণমূলে । বললেন, "ভুল বুঝে প্রার্থী হয়েছিলাম ।"
রবিবার সকাল থেকেই তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুর এলাকা । এই সংঘর্ষে উভয় দলেরই 10 জন আহত হয় ৷ সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় বিশাল পুলিশ যায় । এদিন সন্ধ্যেবেলায় কৃষ্ণপুরে ভগবন্তপুর 1 নং অঞ্চল তৃণমূল কার্যালয়ে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির হাত ধরে আইএসএফ ও সিপিআইএম ছেড়ে 6 জন প্রার্থী-সহ শতাধিক কর্মী যোগদান করে তৃণমূল কংগ্রেসে । তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন চন্দ্রকোনা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ ধাড়া ।
জানা গিয়েছে, আইএসএফ নেতৃত্ব ভাঙড়ের পর চন্দ্রকোনাকে টার্গেট করেছিল । এবারে নির্বাচনে তারা প্রথম থেকে প্রার্থী দিয়েছিল এবং তাদের আশাও ছিল এখান থেকেই পঞ্চায়েতে বিপুল ভোটে জয়ী হবে । পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়া ও তারপর তাদের মনোনীত প্রার্থীকে যাতে প্রত্যাহার করতে না পারে সে বিজয়েও সজাগ ছিল আইএসএফ নেতৃত্ব । ভাঙড়ে অশান্ত পরিবেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিয়েই রেখেছিল এতদিন ৷ কিন্তু তার বাঁধ ভাঙল এদিন সন্ধ্যাবেলায় ।
আরও পড়ুন : পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে তপ্ত চন্দ্রকোনা, জখম 10
তবে এতজন আইএসএফ কর্মীর যোগদান নিয়ে বিধায়ক অরূপ ধাড়া জানান, সিপিআইএম উসকানি দিয়ে কয়েকজনকে ভুল বুঝিয়ে কৃষ্ণপুর এলাকা উত্তপ্ত করতে চাইছিল । সেই ভুল বুঝতে পেরে আইএসএফ ও সিপিআইএম প্রার্থী-সহ কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ।
অন্যদিকে, তৃণমূলে যোগ দেওয়া আইএসএফ প্রার্থী নাজিরা বিবি ও সিপিআইএম প্রার্থী সাকিনা খাতুন বলেন, "আমরা আগে তৃণমূলই করতাম । ভুল বুঝে অন্য দলের প্রার্থী হয়েছিলাম । ভুল বুঝতে পেরে আমরা আজ তৃণমূলে ফিরে এসেছি ।"
যদিও প্রার্থীদের এহেন যোগদান প্রসঙ্গে সিপিআইএমের তরফে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ৷ তবে সমগ্র বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, সকাল থেকে যারা তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করে আহত হল তারা হঠাৎ সন্ধ্যায় তৃণমূলে যোগদান করল কেন ? এটা থেকেই কি স্পষ্ট যে, আগে তৃণমূল বিধায়কের দেওয়া হুঁশিয়ারি কৃষ্ণপুর এলাকায় কোনও বিরোধী দলের পতাকা থাকবে না সেই বক্তব্যেরই প্রতিফলন আজকের এই যোগদান ।