মেদিনীপুর, 4 ফেব্রুয়ারি: শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC Inner Clash) থামাতে এবং পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে বিরাট সমাবেশের আয়োজন কেশপুরের আনন্দপুরে। তবে বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় সেই সভায় থাকবেন কি না তা নিয়ে নিশ্চিত করে কেউই কোনও কথা বলতে পারছেন না । রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের দাবি, এখন যা পরিস্থিতি তাতে বড় ধরনের কোনও চমক হওয়ার সম্ভবনা কম। কিন্তু তারপরও এই সভা ও সমাবেশ ঐতিহাসিক হবে বলে দাবি তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের।
এই প্রথম কেশপুরের আনন্দপুরে সভা করতে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর তা ঘিরে এখন জেলায় সাজো সাজো রব। শুধু আনন্দপুর-কেশপুর নয় এই সভার আয়োজনে ইতিমধ্যে তৃণমূল সাংগঠনিক দু'টি জেলার সভাপতি থেকে শুরু করে বিধায়ক, সাংসদ ও মন্ত্রীরাও আসরে নেমেছেন। গত কয়েকদিন একাধিকবার সভাস্থল পরিদর্শন দলীয় নেতারা। এদিন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করে দিতে চায় তৃণমূল ।
কেশপুর, আনন্দপুর, ঘাটাল থেকে শুরু করে দাসপুর, চন্দ্রকোনা, গড়বেতা, শালবনি, রেল শহর খড়গপুর কেশিয়াড়ি এবং শেষ প্রান্ত দাঁতন থেকে সভায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা আসবেন বলে খবর । সভার জেরে মেদিনীপুর শহর তো বটেই সমগ্র জেলা এদিন স্তব্ধ হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন সভায় বিশেষ চমক থাকছে । বিজেপিকে বিপাকে পড়ে এমন কিছুই করার কথা ভাবছে শাসক শিবির ।
কী চমক দেওয়ার কথা ভাবছে তৃণমূল? রাজনৈতিক মহলের কেউ কেউ মনে করছেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে দলে নিয়েই চমক দিতে চায় তৃণমূল । অভিনেতা তথা বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূলের বড় নেতা অজিত মাইতি একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল দিন কয়েক আগেই । তবে হিরণ অবশ্য এই ধরনের জল্পনাকে আমল দিতে চাননি । তড়িঘড়ি কলকাতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হিরণ সাফ জানিয়ে দেন তাঁর ছবি এডিট করে বসানো হয়েছে তৃণমূল নেতার সঙ্গে। বিজেপি বিধায়ক তথা কাউন্সিলর প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন তৃণমূলে যাওয়ার তো কোনও ইচ্ছাই নেই।বরং তৃণমূলের বহু নেতা-মন্ত্রী বিজেপিতে আসার অপেক্ষায় আছেন ।
আরও পড়ুন: ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিজেপি বিধায়কদের, ফের তুঙ্গে দলবদল জল্পনা
যদিও এরপরে হিরণের বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করেছে তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর, বিধায়ক অজিত মাইতি। হুমকিও দিয়েছে এক প্রকার। কিন্তু এই সভায় যোগদানের অনিচ্ছার কথা হিরণ প্রকাশ্যে বলে ফেলার ফলে সভার গুরুত্ব হারিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ফলে তৃণমূলের সভায় কত লোক হবে বা সভা সফল হবে কি না, সেই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এই সভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আজ দুপুর নাগাদ। তাই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে এলাকা।
হেলিপ্যাডের পাশাপাশি গাড়িতে আসার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সভার আনাচে-কানাচে আছে বসছে সিসিটিভি। সভার প্রবেশের ক্ষেত্রে পার পাননি সাংবাদিকরা। নিরাপত্তায় এত কড়াকড়ি যে সাংবাদিকদের প্রবেশের জন্যও ডিআইবি পাসের সঙ্গে অফিস কার্ডের অনুমতির নির্দেশিকা জারি করানো হয়েছে। আজকের এই সভার প্রস্তুতিতে থাকা জেলার-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, "জেলার প্রায় 100 শতাংশের মধ্যে মাত্র 5 শতাংশ লোক এই সভায় আসবেন। তাতেও লোক ধরানোর জায়গা থাকবে না। দু'টো মাঠ নেওয়ার পরও প্রচুর লোককে বাইরে অপেক্ষা করতে হবে।" তবে তিনি পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নয় বরং সমাবেশের বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছেন, এড়িয়ে গিয়েছেন হিরণ যোগ ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা।