পশ্চিম মেদিনীপুর, 25 জুলাই : ফের একবার মৃত রোগীকে জীবিত দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকার বিল তৈরির অভিযোগ মেদিনীপুর শহরের এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ৷ নির্ণয় নামে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে এক রোগীর মৃত্যুর পরও, তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানোর নামে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ মৃত বীণা দে’র পরিবারের অভিযোগ মাত্র 3 দিনে 1 লাখ 26 হাজার টাকা বিল করেছে ওই নার্সিংহোম ৷ তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন, শনিবার সকালেই বীণাদেবীর মৃত্যু হয় ৷ কিন্তু, তা পরিবারকে জানানো হয়নি ৷ শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ পরিবারের তরফে চেপে ধরা হলে মৃত্যুর কথা জানানো হয় ৷ এই অভিযোগ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷
প্রসঙ্গত, কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে গত বুধবার সংকটজনক অবস্থায় মেদিনীপুর শহরের নির্ণয় নার্সিংহোমে ভর্তি হন চন্দ্রকোণা রোডের সাতবাঁকুড়ার বাসিন্দা বীণা দে ৷ অভিযোগ তাঁকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে ভর্তি করাতে চাইলে, তা নিতে অস্বীকার করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷ বলা হয় স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে বীণাদেবীর রোগের চিকিৎসা হয় না ৷ বাধ্য হয়েই তাঁর পরিবারের সদস্যরা নগদ টাকা দিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি করান ৷ কিন্তু, শনিবার সকালের পর থেকেই আইসিইউতে ভর্তি থাকা বীণাদেবীর কোনও খবর পরিবারের লোকজন পাচ্ছিলেন না ৷ কিন্তু, তাঁর শারীরিক পরীক্ষার নামে টাকা চাইতে থাকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷
পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হওয়ায়, তাঁরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে চেপে ধরলে সত্যিটা সামনে আসে ৷ জানা যায়, শনিবার সকালেই মৃত্যু হয়েছে বীণা দে’র ৷ তা সত্ত্বেও রোগীর চিকিৎসার নাম করে টাকা নিতে থাকে নার্সিংহোম ৷ এর পর নার্সিংহোমের বিল মেটাতে গিয়ে মাথায় বজ্রাঘাত হয় পরিবারের ৷ দেখা যায় মাত্র তিনদিনে 1 লাখ 26 হাজার টাকা বিল করা হয়েছে ৷ গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে মৃতের পরিবার ৷ এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. ভুবনচন্দ্র হাঁসদা জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷
আরও পড়ুন : মেদিনীপুরের এক নার্সিংহোমে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ
তবে, এটাই প্রথম নয় ৷ এর আগেও এমন বহু অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর শহরের নির্ণয় নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ৷ কয়েক সপ্তাহ আগে মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা রথীন চক্রবর্তীকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রেখে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ ছিল, কোনও চিকিৎসক তাঁকে দেখেননি ৷ এমনকি মারা যাওয়ার পর নার্সিংহোমের তরফে দেড় লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷