মেদিনীপুর, 6 সেপ্টেম্বর: চায়ের চুমুকে রাজনীতীর স্বাদ ৷ শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই, অবাক হওয়ারই কথা ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের এবার এক ডিপ্লোমাধারী যা করলেন তাতে একথায় উঠে আসছে ৷ 'পলিটিক্যাল চা-ওয়ালা'। তাঁর দোকানে এই চা খেতে এসে আসর জমাচ্ছেন তরুণ থেকে বয়স্করা। মূলত রাজনীতিকে আকর্ষণ করার জন্য এবং রাজনীতির 'ভালো' দিকটা তুলে ধরার জন্যই এই প্রয়াস। রয়েছে 7 থেকে 40 টাকা দামের ভিন্ন ধরনের ভ্যারাইটি চায়ের আসর।
'রাজনীতি অসৎ নয় ৷ রাজনীতিতে আসা ব্যক্তিত্ব থেকে নেতারা সবাই অসৎ নন ৷ রাজনীতিতে প্রয়োজন তরুণ প্রজন্ম ৷' এই বার্তা দিতেই এবার ডিপ্লোমাধারীর চা-ওয়ালার আসর মেদিনীপুর শহরে। আর সেই চায়ের দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে পলিটিক্যাল চায়ে-ওয়ালা, অ্যা টেস্ট অফ ডেমোক্রেসি ইন এভরি কাপ। এরকমই দোকান দিয়ে চায়ের আসর বসিয়ে রাজনীতি সচেতনতা বাড়াতে বার্তা দিচ্ছেন মেদিনীপুরের বছর আটত্রিশের অঞ্জন দাস অধিকারী।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ডিপ্লোমা করেছেন বছর আটত্রিশের অঞ্জন। এরপর ভিন্ন রাজ্যে কাজ করেছেন। রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘ আকর্ষণ। কিন্তু বাবার অসুস্থতার কারণে এরপর প্রত্যাবর্তন মেদিনীপুরে। বাবার অসুস্থতায় প্রয়োজন টাকার ৷ অন্যদিকে, প্রবল আগ্রহ রাজনীতি নিয়ে। নেতাদের বক্তব্য, সভা আলাপ-আলোচনা কলাকৌশল নিয়েও আগ্রহের সীমা নেই এই অঞ্জনের। কিন্তু বাবার অসুস্থতা এবং পরিস্থিতিতে অবশেষে অর্থের যোগানে শেষ পর্যন্ত দোকান খুলতে বাধ্য হন তিনি ৷
তাই সাধ আর সাধ্যের মধ্যে দোকান খুলেছেন তিনি ৷ নিজের পেশা, ইচ্ছেকে মান্যতা দিয়ে দোকানের নাম দিয়েছে পলিটিক্যাল চায়ে-ওয়ালা। মূলত নামেতেই প্রকাশ পাচ্ছে তাঁর রাজনীতির গন্ধ। আর তাই তরুণ প্রজন্ম ও পড়ুয়াদের নিয়েই এই চায়ে-ওয়ালার আসর চলে মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া সংলগ্ন এলাকায়। চায়ের দোকানে আড্ডা জমান তরুণ, তরুণী-সহ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। চা খেতে খেতে আলোচনা করেন, 'বাম ডান'-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের রাজনীতির কলা কৌশল ৷ আর তাতেই কিছুটা হলেও নিজের ইচ্ছেপূরণ হয় এই অঞ্জনের।
অঞ্জন ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল রাজনীতিতে নেতা হওয়া এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা ৷ তবে ইচ্ছেকে মান্যতা দিয়েই এই দোকানের নাম রেখেছেন পলিটিক্যাল চায়ে-ওয়ালা। যেখানে সমস্ত তরুণ প্রজন্মকে জানানো হচ্ছে রাজনীতি মানে অসৎ নয়, দুর্নীতি নয়। অনেক ভালো মানুষ আছে এবং সৎ রাজনীতিও করা যায়।
যদি চা খেতে আসা সৌরভ, হিমাদ্রি, বিক্রমরা বলেন, "অঞ্জনদার চায়ের দোকানের নাম এবং চা এই এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধু চা খেতে আসা রাজনীতির আলোচনা আমাদের মধ্যে হয়। তবে তরুণ সমাজকে রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন বলেও আমরা মনে করি। কারণ সমস্ত রাজনীতি দুর্নীতিতে যুক্ত বা অস্বচ্ছ নয়। আর সেই জ্ঞান নিতেই এই পলিটিক্যাল চায়ে-ওয়ালার কাছে আসা আমাদের।"
আরও পড়ুন: মোদির সঙ্গে 'চায়ে পে চর্চা'য় ফুচকা খেয়ে অভিভূত জাপানের প্রধানমন্ত্রী