ETV Bharat / state

Sreenu Naidu Murder Case: খড়গপুরের ত্রাস শ্রীনু নাইডু খুনে বেকসুর খালাস বাসব রামবাবু-সহ 13 অভিযুক্ত, প্রভাবিত হয়ে রায়ের অভিযোগ - sreenu naidu murder case

শ্রীনু নাইডু খুনে 6 বছর পর রায় দিল মেদিনীপুর জেলা আদালত ৷ মূল অভিযুক্ত বাসব রামবাবু-সহ 13 জনকে বেকসুর খালাসের রায় দিলেন বিচারপতি ৷

ETV Bharat
শ্রীনু নাইডু
author img

By

Published : Jun 27, 2023, 8:11 PM IST

আদালতের রায় নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য

খড়গপুর, 27 জুন: খড়গপুরের মাফিয়া শ্রীনু নাইডু হত্যা মামলায় 6 বছর পর বেকসুর খালাস পেলেন রামবাবু-সহ 13 জন অভিযুক্ত । যদিও এই বেকসুর খালাসের প্রসঙ্গে প্রভাবিত হয়েই রায় দিয়েছেন বিচারক বলে অভিযোগ শ্রীনুর আইনজীবীর । তিনি এবার হাইকোর্টে আবেদন করার কথাও জানান । শ্রীনুর স্ত্রী তথা কাউন্সিলর পূজা নাইডুরও একই অভিযোগ ৷

2017 সালের 11 জানুয়ারি বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে খুন হন শ্রীনু নাইডু। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর এক সহকর্মীরও। নিখুঁত চিত্রনাট্য মেনেই তাঁকে খুনের অপারেশন চালানো হয় হয় বলে তদন্তে নেমে জানতে পারে পুলিশ । এরপরই সেই মামলা অনেকদূর পর্যন্ত গড়ায় । ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই বছরই 28 ফেব্রুয়ারি অন্ধপ্রদেশের তানুকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বাসব রামবাবুকে । এছাড়াও এই ঘটনায় মোট 13 জনকে গ্রেফতার করা হয় ।

যদিও তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নেতৃত্বে চটজলদি এই মামলায় দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে সিআইডি তদন্তে আরও কিছু দুষ্কৃতীকে ধরা হয় । শেষ পর্যন্ত বাসব রামবাবুর নামও এই মামলায় জড়িয়ে যায় । এরপর পুলিশ খোলসা করেছিল কীভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে । কারা কোথায় কোথায় মিটিং করেছে, কারা কারা জড়িত, কীভাবে এর ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয় এবং শাসকদলের পার্টি অফিসে বসে থাকা অবস্থায় গুলি চালিয়ে কীভাবে হত্যা করা হয় মাফিয়া শ্রীনু নাইডুকে । সেই মামলা 2017 থেকে শুরু হয়ে চলল 2023 সাল পর্যন্ত । ঘটনার 87 দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়ে মেদিনীপুর আদালতে ।

খড়গপুরের রেলমাফিয়া বাসব রামবাবু-সহ 13 জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয় এই মামলায় । যদিও এই মামলায় তৎকালীন সময় শ্রীনুর স্ত্রী পূজা নাইডু অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষের দিকে। কিন্তু তারপর অনেকদূর পর্যন্ত জল গড়ায়। অবশেষে 6 বছর পর রায় দিল মেদিনীপুর জেলা আদালত ।

উল্লেখ্য, রেলশহর হিসাবে পরিচিত এই খড়গপুরে রেলের স্ক্র্যাপ বিক্রি নিয়ে মাফিয়ারাজ চলত এক সময় । পর পর গৌতম চৌবে, রামবাবু, শ্রীনু নাইডু এই নামগুলি এসেছে সেই সূত্র ধরেই । সূত্র অনুযায়ী এই মাফিয়া শ্রীনুও রামবাবুর ঘনিষ্ঠ ছিল । তবে তা বেশিদিন টেকেনি । মূলত বিবাদ শুরু হয় জিটি-র রফা নিয়ে । পরবর্তীকালে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে শ্রীনুর । তিনি তৃণমূল নেতা হয়ে ওঠেন রাতারাতি । কিন্তু জিটি নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় তাঁর । এদিকে গৌতম চৌবেকে খুনের অভিযোগে জেল খাটে বাসব রামবাবু । একসময় যে রামবাবুর নামে খড়গপুরের মানুষ ভয়ে কাঁপত সেই রামবাবুর শারীরিক অবস্থার কারণেও ধীরে ধীরে এলাকায় ডর কমতে থাকে । তার মধ্যেই খুন হন শ্রীনু । মূলত সেই সময় অভিযোগ ওঠে শ্রীনুর দাপট কমাতেই বাসব রামবাবু এই হত্যা করেছেন । শ্রীনুর মৃত্যুতে বাসব রামবাবুর জেল এমনকী খড়গপুরের উঠতি কয়েকজন ডনের জেল হয় ৷ যার ফলে মাফিয়ারাজে ইতি পড়ে রেল শহর খড়গপুরে ।

আরও পড়ুন : শ্রীনু হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তকে মোবাইল ও মাদক সরবরাহ, ধৃত সংশোধনাগারকর্মী

আসামী পক্ষের আইনজীবী অজয় ঘোষ বলেন, "এতদিন ধরে মামলা চলার পর আজ বিচারপতি রামবাবু-সহ 13 জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন । এনারা শীঘ্রই জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন । তবে শ্রীনু নাইডুর কেস বাদে যদি এদের বিরুদ্ধে অন্য কোনও কেস থাকে তাহলে তাদেরকে সেই কেসে জেলে থাকতে হতে পারে । তবে এই ঘটনা কারা ঘটাল বা এনারা জড়িত কি না, কেনই বা ছাড়া পেলেন সে বিষয়ে আমাদের বলার এক্তিয়ার নেই, সেটা সম্পূর্ণ বিচারকের ব্যাপার।"

তবে অন্য অভিযোগ করেছেন শ্রীনুর আইনজীবী সমর নায়েক ৷ তিনি বলেন, "এই রায়টা কীভাবে বিচারক দিলেন তা বলতে পারব না । সম্ভবত উনি প্রভাবিত হয়েই এই অর্ডার দিয়েছেন । আমরা আপিল করব হাইকোর্টে । তবে যতটুকু অর্ডার কপি বুঝেছি বেনিফিট অফ ডাউটে সবাইকে খালাস দিয়েছেন উনি । আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি । এই ঘটনায় কোর্টে সাক্ষীরা সনাক্ত করেছে দোষীদের । অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, যে গাড়িতে করে ওরা এসেছিল তাও রিকভারি হয়েছে তারপরও এই ধরনের অপ্রত্যাশিত রায় আমরা মানছি না ।"

আদালতের রায় নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য

খড়গপুর, 27 জুন: খড়গপুরের মাফিয়া শ্রীনু নাইডু হত্যা মামলায় 6 বছর পর বেকসুর খালাস পেলেন রামবাবু-সহ 13 জন অভিযুক্ত । যদিও এই বেকসুর খালাসের প্রসঙ্গে প্রভাবিত হয়েই রায় দিয়েছেন বিচারক বলে অভিযোগ শ্রীনুর আইনজীবীর । তিনি এবার হাইকোর্টে আবেদন করার কথাও জানান । শ্রীনুর স্ত্রী তথা কাউন্সিলর পূজা নাইডুরও একই অভিযোগ ৷

2017 সালের 11 জানুয়ারি বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে খুন হন শ্রীনু নাইডু। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর এক সহকর্মীরও। নিখুঁত চিত্রনাট্য মেনেই তাঁকে খুনের অপারেশন চালানো হয় হয় বলে তদন্তে নেমে জানতে পারে পুলিশ । এরপরই সেই মামলা অনেকদূর পর্যন্ত গড়ায় । ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই বছরই 28 ফেব্রুয়ারি অন্ধপ্রদেশের তানুকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বাসব রামবাবুকে । এছাড়াও এই ঘটনায় মোট 13 জনকে গ্রেফতার করা হয় ।

যদিও তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নেতৃত্বে চটজলদি এই মামলায় দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে সিআইডি তদন্তে আরও কিছু দুষ্কৃতীকে ধরা হয় । শেষ পর্যন্ত বাসব রামবাবুর নামও এই মামলায় জড়িয়ে যায় । এরপর পুলিশ খোলসা করেছিল কীভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে । কারা কোথায় কোথায় মিটিং করেছে, কারা কারা জড়িত, কীভাবে এর ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয় এবং শাসকদলের পার্টি অফিসে বসে থাকা অবস্থায় গুলি চালিয়ে কীভাবে হত্যা করা হয় মাফিয়া শ্রীনু নাইডুকে । সেই মামলা 2017 থেকে শুরু হয়ে চলল 2023 সাল পর্যন্ত । ঘটনার 87 দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়ে মেদিনীপুর আদালতে ।

খড়গপুরের রেলমাফিয়া বাসব রামবাবু-সহ 13 জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয় এই মামলায় । যদিও এই মামলায় তৎকালীন সময় শ্রীনুর স্ত্রী পূজা নাইডু অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষের দিকে। কিন্তু তারপর অনেকদূর পর্যন্ত জল গড়ায়। অবশেষে 6 বছর পর রায় দিল মেদিনীপুর জেলা আদালত ।

উল্লেখ্য, রেলশহর হিসাবে পরিচিত এই খড়গপুরে রেলের স্ক্র্যাপ বিক্রি নিয়ে মাফিয়ারাজ চলত এক সময় । পর পর গৌতম চৌবে, রামবাবু, শ্রীনু নাইডু এই নামগুলি এসেছে সেই সূত্র ধরেই । সূত্র অনুযায়ী এই মাফিয়া শ্রীনুও রামবাবুর ঘনিষ্ঠ ছিল । তবে তা বেশিদিন টেকেনি । মূলত বিবাদ শুরু হয় জিটি-র রফা নিয়ে । পরবর্তীকালে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে শ্রীনুর । তিনি তৃণমূল নেতা হয়ে ওঠেন রাতারাতি । কিন্তু জিটি নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় তাঁর । এদিকে গৌতম চৌবেকে খুনের অভিযোগে জেল খাটে বাসব রামবাবু । একসময় যে রামবাবুর নামে খড়গপুরের মানুষ ভয়ে কাঁপত সেই রামবাবুর শারীরিক অবস্থার কারণেও ধীরে ধীরে এলাকায় ডর কমতে থাকে । তার মধ্যেই খুন হন শ্রীনু । মূলত সেই সময় অভিযোগ ওঠে শ্রীনুর দাপট কমাতেই বাসব রামবাবু এই হত্যা করেছেন । শ্রীনুর মৃত্যুতে বাসব রামবাবুর জেল এমনকী খড়গপুরের উঠতি কয়েকজন ডনের জেল হয় ৷ যার ফলে মাফিয়ারাজে ইতি পড়ে রেল শহর খড়গপুরে ।

আরও পড়ুন : শ্রীনু হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তকে মোবাইল ও মাদক সরবরাহ, ধৃত সংশোধনাগারকর্মী

আসামী পক্ষের আইনজীবী অজয় ঘোষ বলেন, "এতদিন ধরে মামলা চলার পর আজ বিচারপতি রামবাবু-সহ 13 জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন । এনারা শীঘ্রই জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন । তবে শ্রীনু নাইডুর কেস বাদে যদি এদের বিরুদ্ধে অন্য কোনও কেস থাকে তাহলে তাদেরকে সেই কেসে জেলে থাকতে হতে পারে । তবে এই ঘটনা কারা ঘটাল বা এনারা জড়িত কি না, কেনই বা ছাড়া পেলেন সে বিষয়ে আমাদের বলার এক্তিয়ার নেই, সেটা সম্পূর্ণ বিচারকের ব্যাপার।"

তবে অন্য অভিযোগ করেছেন শ্রীনুর আইনজীবী সমর নায়েক ৷ তিনি বলেন, "এই রায়টা কীভাবে বিচারক দিলেন তা বলতে পারব না । সম্ভবত উনি প্রভাবিত হয়েই এই অর্ডার দিয়েছেন । আমরা আপিল করব হাইকোর্টে । তবে যতটুকু অর্ডার কপি বুঝেছি বেনিফিট অফ ডাউটে সবাইকে খালাস দিয়েছেন উনি । আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি । এই ঘটনায় কোর্টে সাক্ষীরা সনাক্ত করেছে দোষীদের । অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, যে গাড়িতে করে ওরা এসেছিল তাও রিকভারি হয়েছে তারপরও এই ধরনের অপ্রত্যাশিত রায় আমরা মানছি না ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.