দুর্গাপুর, 20 এপ্রিল: গ্রীষ্মের দাবদাহে এমনিতেই ওষ্ঠাগত সাধারণ মানুষের জীবন ৷ তার ওপর কলকারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত জনজীবন। দুর্গাপুর-ফরিদপুর থানার ঝাঁজরা এলাকায় রয়েছে একটি লোহার যন্ত্রাংশ তৈরির বেসরকারি কারখানা। সেই কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা। বিষাক্ত ধোঁয়ার জেরে কালো হয়ে যাচ্ছে বাড়ির ছাদ, পুকুরের জল কুয়োর জল। সেই জল খাওয়া তো দূরের কথা, হাত তুললে দেখা দিচ্ছে চর্মরোগ। একাধিকবার কারখানা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও কোন কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। প্রতিবাদে কারখানার গেট বন্ধ করে আন্দোলনে নামলেন কয়েকশো এলাকাবাসী।
আন্দোলনের জেরে বন্ধ হয়ে গেল কারখানার উৎপাদন। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।দুর্গাপুরে বেশ কয়েকটি শিল্পতালুকেব পাশাপাশি বসবাসকারী জনজীবন ঠিক একই অভিযোগ তুলেছেন বারেবারে। এর আগে দুর্গাপুর নগর নিগমের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি ছিল কিন্তু এখন আর তা নেই। অভিযোগ রাজ্য সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ দফতরের আধিকারিকরাও সমস্ত কিছু দেখে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করছেন। প্রত্যেকটি কারখানায় বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পোস্টার লাগানো হয় সেই ইউএসপি যন্ত্র কারখানা কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচানোর জন্য এমন অভিযোগে উঠে এসেছে দীর্ঘকাল থেকে।
সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে দিনকে দিন। শুধু ঝাঁজরা নয় দুর্গাপুরের সগড়ভাঙা, রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর, ডিপিএল, করঙ্গোপাড়া, নেপালি পাড়া-সহ বামুনাড়া, গোপালপুর এবং ফরিদপুর থানার হেতেডোবা, ইছাপুর এলাকার বাসিন্দারাও শিল্প দূষণের জেরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় জানান, ঝাঁজরা গ্রামের এই সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আজকেই সমস্ত পক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছেন এবং আজকেই এই বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।
আরও পড়ুন: কুড়মি সমাজের সঙ্গে আলোচনায় রফাসূত্র বেরল না, আবার কি শুরু হবে আন্দোলন ?
কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদিও বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি থেকে জেলা সভাপতি সবাই এই কারখানা গুলি থেকে মাশোহারা আদায় করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাই বুক ফুলিয়ে এই দূষণ ছড়াতে পারছে। অসহায় গ্রামের মানুষের কথা কেউ ভাবে না। অন্যদিকে, গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতারা এই ইস্যুতে এককাট্টা। তাঁদের অভিযোগ, ঝাঁজরা এলাকার বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন ৷ তাই তাঁরা এই দূষণ বন্ধ না-হলে আগামিদিনে এই কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।