দুর্গাপুর, 11 ডিসেম্বর: বাড়ির দুই পোষ্য কুকুর ধরিয়ে দিল খুনে অভিযুক্তদের ৷ কাঁকসায় একই পরিবারের তিন সদস্যের খুনের ঘটনায় এবার গ্রেফতার প্রতিবেশী প্রসেনজিৎ কর্মকার। গত বছরের নভেম্বরেই দুর্গাপুরের কাঁকসায় এক মর্মান্তিক খুনের ঘটনা সামনে আসে। খুন করা হয় সিমরন বিশ্বকর্মা ,তাঁর দিদিমা ও মামার ছেলেকে । তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশ সিমরনের কাকিমা রিঙ্কু বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করেই আরও দুই অভিযুক্ত পুলিশের জালে। রবিবারই গ্রেফতার হয় মহম্মদ জুনেইদ ওরফে পাপ্পুকে। এবার মঙ্গলবার গ্রেফতার হল নিহত সিমরনের প্রতিবেশী প্রসেনজিৎ কর্মকার। নেপথ্যে দুই সারমেয় বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
2023-এরস, 10 নভেম্বর, ভর দুপুরে বাড়িতে ঢুকে তিনজনকে খুন করে দুষ্কৃতী। অথচ বাড়িতে থাকা দু’টি পোষ্য বিদেশি কুকুর কেন চিৎকার করল না ? দুর্গাপুরের কাঁকসার সারদাপল্লির এই খুনের তদন্তে নেমে ঠিক সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিলেন তদন্তকারীরা । তাহলে কি খুনিকে চেনে ওই দুই সারমেয় ? এই প্রশ্নের উত্তরেই লুকিয়ে ছিল সূত্র! রিঙ্কুকে লাগাতার জেরা করে তদন্তের গভীরে পৌঁছয় পুলিশ । তারপরেই পাপ্পুর পর গ্রেফতার করা হল প্রতিবেশী প্রসেনজিৎকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার কয়েকদিন আগে কাঁকসার সারদাপল্লির ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা সস্ত্রীক আসামে গিয়েছিলেন তাঁর বড় মেয়ের বাড়িতে । বাড়িতে ছিল ছোট মেয়ে সিমরন, ধনঞ্জয়ের শাশুড়ি সীতাদেবী এবং শ্যালকের ছেলে সনু বিশ্বকর্মা । তাঁদের শ্বাস রোধ করে খুন করা হয়। ধনঞ্জয়ের ভাই রাজু দাবি করেন, তিনি বিশেষ কাজে ইলামবাজারে গিয়েছিলেন । এসে স্ত্রী রিঙ্কুর মুখে শোনেন, হেলমেট পরে বাইক নিয়ে কেউ এসেছিল ধনঞ্জয়ের বাড়িতে। আবার হেলমেট পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইক নিয়ে চলে যায় । সিমরনের কাকিমা রিঙ্কু দেখেন সিমরণ এবং সীতাদেবীর দেহ পড়ে আছে দু’টি বিছানায় । সোনুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে বাড়ির উঠোনে । মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অবশেষে গত বুধবার রিঙ্কুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রিঙ্কুর সঙ্গে মহম্মদ জুনেদ ওরফে পাপ্পুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা সিমরন জানতে পেরে যায়। সিমরন তার কাকিমা রিঙ্কুর মোবাইলে একটি বিশেষ 'অ্যাপ' ডাউনলোড করে তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখত ৷ সমস্ত খবর পরিবারে জানিয়েও দেয় সে। সেই কথা পরে জানতে পেরে যায় রিঙ্কু । তারপরই সিমরনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে ৷ এমনটাই অনুমান পুলিশের ৷ তবে জুনেদের সঙ্গে সিমরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ৷ তার থেকেই সিমরনকে খুন করা হতে পারে বলেও অনুমান পুলিশের ৷ প্রমাণ লোপাট করতে ধনঞ্জয়ের শাশুড়ি সীতাদেবী এবং শ্যালকের ছেলে সনু বিশ্বকর্মাকেও খুন করা হয় । তবে, এই খুনের ঘটনায় প্রসেনজিতের কী যোগ তা এখনও অধরা থাকলেও, হত্যাকাণ্ডে রিঙ্কুর সঙ্গে প্রসেনজিতের যোগ রয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের ।
আরও পড়ুন: