আসানসোল, 16 অগস্ট: এ যেন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা । স্বামী উঠছেন তো স্ত্রী বসছেন, আবার স্ত্রী উঠলেন তো স্বামী বসলেন । পশ্চিম বর্ধমান জেলা গঠনের পর জেলা পরিষদের জন্মলগ্ন থেকেই এই দম্পতিই জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন । বিশ্বনাথ বাউরি এবং তাঁর স্ত্রী সুভদ্রা বাউরি, এতদিন পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ চালিয়ে এসেছেন । পুনরায় সেই বিশ্বনাথ বাউরিতেই ভরসা রাখল তৃণমূল কংগ্রেস । তাঁকেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের নির্বাচিত করা হল বুধবার। এদিন তিনি শপথ নেন ৷
2016 সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরি হয় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান জেলাকে দুই ভাগে ভাগ করে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরি করেন । আসানসোল এবং দুর্গাপুর মহকুমা নিয়ে এই জেলা গঠিত হয় । 2017 সালে জেলা পরিষদ গঠন হয় পশ্চিম বর্ধমানে এবং প্রথম জেলা পরিষদের আমন্ত্রিত সভাধিপতি হন বিশ্বনাথ বাউরি । যদিও সেই সময়কাল বেশিদিন থাকেনি । 2018 সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় এবং সেই সময় জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী তথা বিশ্বনাথ বাউরীর স্ত্রী সুভদ্রা বাউরিকেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে মনোনীত করে তৃণমূল কংগ্রেস । দীর্ঘ পাঁচ বছর সময়কাল ধরে সুভদ্রা বাউরি পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ আসনটি চালিয়েছেন । এবারে তিনি প্রার্থী হননি । তার বদলে প্রার্থী হয়েছিলেন তার স্বামী বিশ্বনাথ বাউরি ।
যদিও জেলা পরিষদ সভাধিপতির আসনটি ছিল এবার সাধারণ । কিন্তু সংরক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী সেই বিশ্বনাথ বাউরিকেই পুনরায় জেলা সভাধিপতি হিসেবে মনোনীত করল তৃণমূল কংগ্রেস অর্থাৎ জেলা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সুভদ্র বাউরি ও বিশ্বনাথ বাউরি ব্যতীত অন্য কোনও নতুন মুখ জেলা দেখতে পেল না সভাধিপতির আসনে । তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন "উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য এবং সেই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বনাথ বাউরির মতন একজন অভিজ্ঞ মানুষকেই জেলার সভাধিপতি করা হয়েছে । আমাদের আশা বিশ্বনাথ বাউরি গ্রামেগঞ্জে আরও উন্নয়নের জোয়ার নিয়ে যাবেন মানুষের কাছে ।"
আরও পড়ুন: দলিতদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূল বিধায়কের
অন্যদিকে, বিশ্বনাথ বাউরি জানিয়েছেন "এতদিন পর্যন্ত আমার স্ত্রী সুভদ্রা বাউরি জেলা সভাধিপতি ছিলেন। দল এবার আমাকে মনোনীত করেছে। মানুষের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। আমি আমার সমস্ত কিছু দিয়ে চেষ্টা করব মানুষকে যাতে সঠিক পরিষেবা দিতে পারি । "অন্যদিকে বিষয়টিকে নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তিনি ফোনে জানিয়েছেন "তৃণমূল কংগ্রেস দলটিতে বারবারই পরিবার তন্ত্র তো দেখা গিয়েছে, এক্ষেত্র পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের আসনটি স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে বারবার। গণতন্ত্র যে নেই এটা স্পষ্ট হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাধিপতির আসনেই ।