দুর্গাপুর, 30 জুলাই : ছোটোবেলা থেকেই বাবার এই বন্ধুকে বাড়িতে আসতে দেখেছে ৷ যাকে দেখে প্রথম থেকেই কোলে উঠতে চাইত ছোটকি ৷ সেই বন্ধুর বাড়ির শৌচাগার থেকে মেয়ের নিথর দেহ উদ্ধার হবে তা বোধহয় কোনও দিন কল্পনাতেও আসেনি মধ্য তিরিশের রাজেশ শুক্লার ৷
পেশায় ঠিকা শ্রমিক রাজেশের সঙ্গে শেখ কামরুলের দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্পর্ক ৷ এই দুই বন্ধুর বন্ধুত্ব ফরিদপুরের ছোট্টো মামাকুটি গ্রামের সকলেরই চোখে পড়েছে ৷ অনেকে তো তাদের অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু বলে টিপ্পনি কাটতেও ছাড়ত না ৷ দিন কয়েক আগে এই দুই বন্ধুর মধ্যে ঝামেলা হয় ৷ স্থানীয়দের দাবি, মদ খাওয়া নিয়েই তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা চরমে ওঠে ৷ সেই অশান্তির পর থেকেই দুই বন্ধুর মধ্যে মুখ দেখাদেখি প্রায়ই বন্ধ ৷ সোমবার সকাল থেকে যখন ন'বছরের ছোটকিকে পাওয়া যাচ্ছিল না তখনও কিন্তু এই আশঙ্কা তীব্র হয়নি ৷ অবশেষে পুলিশের জেরাতে নাবালিকাকে খুনের কথা স্বীকার করে কামরুল ৷
কেন কামরুল ছোটকিকে খুন করল ?
জেরায় সে জানিয়েছে বন্ধুকে শাস্তি দিতেই এই ছক কষে সে ৷ প্রথমে ছোট্টো ছোটকীকে তুলে আনে ৷ তারপর নিজের ঘরের মধ্যেই গলা টিপে খুন করে 35 বছরের কামরুল ৷ এরপর শৌচাগারে দেহটি লুকিয়ে রাখে ৷ পুলিশের অনুমান, সুযোগ বুঝে দেহটা কবর দেওয়ার ছক ছিল অভিযুক্তের ৷ কিন্তু, তার আগেই কামরুলকে গ্রেপ্তার করে ফেলে পুলিশ ৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর থানার পুলিশ । আগামীকাল তাদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে ৷
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন , গতকাল দুপুর থেকে হঠাৎই খোঁজ মিলছিল না ছোটকির ৷ তন্ন তন্ন হয়ে চারপাশে চলছিল খোঁজ ৷ খবর দেওয়া হয়েছিল পুলিশেও ৷ ফরিদপুর থানায় মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার বিষয় অভিযোগ করেন রাজেশ ৷ তখনই কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে কামরুলের সঙ্গে বিবাদের কথা ৷ সেই সন্দেহেই পুলিশ আটক করে কামরুলকে ৷ দফায় দফায় জেরায় নিজের দোষ কবুল করে কামরুল ৷ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ৷ কীভাবে খুন করা হল বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা ৷ অন্যদিকে, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা ৷ অবরুদ্ধ হয় রাস্তাও ৷