আসানসোল , 20 মার্চ : কোরোনার আতঙ্কের জেরে বন্ধ হয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল -কলেজ । পাশাপাশি প্রাইভেট টিউশনগুলিও ৷ 31 মার্চ অবধি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার । সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে পড়ুয়ারা যাতে নিজের ঘরে বসে শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে লেখাপড়া করতে পারেন, এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করছেন আসানসোলের এক শিক্ষক । সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে ভিডিয়ো চ্যাটের মাধ্যমে তিনি প্রস্তুত ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশনি দিতে । অন্যদিকে, ছাত্রছাত্রীরাও খুশি এই অভিনব পদ্ধতিতে কোচিং নিতে ।
আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু । ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার সায়েন্স পড়ান তিনি ৷ কিন্তু সম্প্রতি তাঁর নিজের যে কোচিং সেন্টার রয়েছে সেই কোচিং সেন্টার তিনি বন্ধ রেখেছেন কোরোনার আতঙ্কের কারণে । পরিবর্তে ছাত্র-ছাত্রীদের নিজেদের বাড়িতে বসেই কোচিং নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি ৷ কিন্তু কিভাবে চলছে এই পাঠদান প্রশ্ন করায় শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু জানিয়েছেন "প্রতিদিনকার যে স্টাডি মেটেরিয়াল থাকে, সেই পড়ানোটা তিনি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেন । এরপর বাড়িতে বসেই সেই ভিডিও ছাত্রছাত্রীরা দেখে নিচ্ছে তাঁদের নিজেদের সময় মতো । পরবর্তীকালে সেই স্টাডি মেটেরিয়াল নিয়ে যদি কোনও প্রশ্ন থাকে ছাত্রছাত্রীদের, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা লাইভ ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে স্যারকে সেই প্রশ্ন করে নিচ্ছেন । চন্দ্রশেখরবাবু আরও জানান "ভিডিও চ্যাটের সময় একই সাথে তিনি চারজন ছাত্রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন ৷ বিষয়টিকে তিনি সকল শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে তুলে ধরতে চাইচ্ছেন ।"
চন্দ্রশেখরবাবুর এক ছাত্র অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, "তাঁদের এই শিক্ষা পদ্ধতি পড়াশোনা করতে আরও উৎসাহিত করছে । তাছাড়াও কোচিং ক্লাসে, অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে লজ্জার কারণে বন্ধুদের সামনে সমস্ত প্রশ্ন করতে পারা যায় না ৷ কিন্তু, বাড়িতে বসে ভিডিয়ো চ্যাটের মাধ্যমে প্রশ্নগুলি স্যারকে সরাসরি করে ফেলাই যায় এবং চটজলদি উত্তরও পাওয়া যায় ৷ "
পড়ুয়ারা খুশি হলেও, পদ্ধতিটাকে তাঁদের অভিভাবকরা প্রথমে মেনে নিতে চাননি ৷ কারণ সোশাল মিডিয়া নিয়ে অভিভাবকরা চিরকালই নাক উঁচু । নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করতে দেখলে তাঁরা বিরক্ত হন । কিন্তু এই ক্ষেত্রে এক নতুন দিক এসেছে । এখন সোশাল মিডিয়া ব্যবহারেও খুশি হচ্ছেন অভিভাবকরা ।