আসানসোল, 14 জানুয়ারি : পৌষ পার্বন মানেই পিঠে, পুলি ৷ আর সেই পিঠে, পুলি বানানোর জন্য শপিং মল থেকে শুরু করে মুদি দোকানগুলিতে দেদার বিকোচ্ছে চাল গুঁড়োর প্যাকেট ৷ কিন্তু একটা সময় ছিল যখন গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করে পিঠে, পুলি তৈরি করা হত ৷ সংক্রান্তির আগে বাড়ির মহিলারা ঢেঁকিতে চাল কুটো করতে ব্যস্ত থাকতেন ৷ তবে আজ সেই ব্যস্ততা অনেকাংশেই কম ৷ তবু আজও পশ্চিম বর্ধমানের কয়েকটি গ্রামে গ্রামবাসীরা পুরানো ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে ৷ তেমনই ছবি ধরা পড়ল ETV ভারতের ক্যামেরায় ।
আসানসোল পৌরনিগমের 74 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামালপুর গ্রাম ৷ প্রত্যন্ত এই গ্রামেই বাস বাউরি পরিবারের ৷ পৌষ পার্বন উপলক্ষে চরম ব্যস্ততা ৷ বাড়ির মহিলারা ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করতে ব্যস্ত ৷ প্রয়োজনে হাত লাগাচ্ছেন পরিবারের পুরুষরাও ৷ নবান্নের পর নতুন ধান ঘরে এসেছে ৷ সেদ্ধ ধানের গন্ধে ম ম করছে বাড়ির আশপাশের এলাকা ৷
পরিবারের এক সদস্য পুতুল বাউরি বলেন, "যখন থেকে বিয়ে হয়েছে পৌষ পার্বণে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করছি ৷ মেশিনের চালে ভালো পিঠে হয় না ৷ তাই বাড়িতে ঢেঁকি রেখেছি ৷ ঢেঁকিতেই চাল গুঁড়ো করি ৷ মেয়েদের শ্বশুরবাড়ি শহরে ৷ সেখানে ঢেঁকির গুঁড়ো চাল পাওয়া যায় না ৷ তাই সেখানে পাঠাবো ৷ "
বাউরি পরিবারের অপর এক সদস্য মনসা বাউরি বলেন, " আমাদের নিজেদের জমি নেই । অন্যের জমিতে চাষ করি । সেখান থেকে যে'টুকু ভাগের ধান পাওয়া যায় সেই ধান থেকে নিজেরাই চাল তৈরি করি ৷ সেই নতুন চাল দিয়ে পিঠে তৈরি হয় । বাজারের কেনা চালে সেই স্বাদ পাওয়া যায় না ।"
গ্রাম বাংলার প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে কামালপুরের বাউরি পরিবার ৷