I
পাণ্ডবেশ্বর, ২৫ ফেব্রুয়ারি : খোট্টাডিহি খনিতে কয়লা উত্তোলনের জন্য লাগাতার বিস্ফোরণের জেরে ফাটল ধরেছে এলাকার একাধিক বাড়িতে। ঘটনাটি পাণ্ডবেশ্বরের বিলপাহাড়ি গ্রামের। এই গ্রামের ৫০ মিটারের মধ্যে রয়েছে খোট্টাডিহি খোলামুখ খনি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই খনিতে কয়লা উত্তোলনের সময় বিস্ফোরণের ফলে যখন তখন কেঁপে ওঠে বাড়িঘর। দেখা দিচ্ছে বড় বড় ফাটল। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীরা।
বিল পাহাড়ি গ্রাম পুনর্বাসন কমিটির সদস্য গণেশ কবিরাজ। তিনি জানান, ২০১১ সালে পূনর্বাসনের আলোচনা হয় ECL কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। ২০১৫ সালে চুক্তি হয় পুনর্বাসনের। প্রায় ১০০০ পরিবারের বাস এই বিলপাহাড়ি গ্রামে। পুনর্বাসন নিয়ে সমস্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ, আজও গ্রামের বাসিন্দাদের জমির প্লট বিতরণ শুরু করেনি ECL কর্তৃপক্ষ। অথচ কয়লা উত্তোলন চলছেই। যার ফলে কেঁপে উঠছে গ্রাম, ফাটল দেখা দিচ্ছে বাড়িঘরে। গ্রামের বাসিন্দা তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, "যে ভাবে দিন দিন খনির সম্প্রসারণ বাড়ছে তাতে গ্রামের জল সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের খুব সামনেই খোলামুখ খনি থাকার কারণে গ্রামের জল স্তর একদম নিচে নেমে গেছে। এই কারণেই গ্রামের কুয়ো ,পুকুরগুলোতে জল নেই বললেই চলে। গ্রীষ্মকালে গ্রামে জল সংকট যে তীব্র আকার নেবে। চিন্তায় রয়েছে গ্রামবাসীরা।" তাঁর আরও বক্তব্য " কয়েকদিন আগে খনিতে বিস্ফোরণের জন্য কিছু বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিছু বাড়িতে ফাটলও ধরে। আমরা বিষয়টি ECL কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। বিষয়টির সামাধান করার প্রস্তাব কমিটির মাধ্যমে দিয়েছিলাম। ২০১১ সাল থেকে পূনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা চাই যত শ্রীঘ্র সম্ভব এই পক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক। আমাদের একটা প্লট দিয়ে দেওয়া হোক। যাতে নিজেদের বাড়ি দ্রুত তৈরি করতে পারি। বিস্ফোরণের কারণে আমরা আতঙ্কে আছি।" গণেশবাবুর বক্তব্য, " গ্রামের রাস্তা বিচ্ছিন্ন। একটাই রাস্তা আছে। ওই রাস্তা দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী, গ্রামবাসী প্রত্যেককেই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ECL কর্তৃক্ক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এরকম চলতে থাকলে আমরা আন্দোলেনর পথে নামতে বাধ্য হব।"
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ECl কর্তৃপক্ষ ধীর গতিতে কাজ করছে। সেই কারণেই এখনও পর্যন্ত তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়নি। এক গ্রামবাসী সীমা ঘোষ জানান, বিস্ফোরণের কারণে যে ভাবে ঘরে ফাটল দেখা দিচ্ছে তাতে রাতে ঘুম উড়েছে তাঁদের। ভয় যদি ঘর বাড়ি ভেঙে পড়ে তাঁদের ওপর। পরিবার নিয়ে বাস করেন। স্বভাবতই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা চান পুনর্বাসনের কাজটির সমস্যা দ্রুত সমাধান হোক। অন্যদিকে পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ার ECL-এর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।