কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর : কোথাও রেল অবরোধ, কোথাও জিটি রোডে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ ৷ সোমবার সকাল থেকেই সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকা ভারত বনধের মিশ্র প্রভাব দেখা গেল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৷ তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার, বিদ্যুৎ বিল 2020 প্রত্যাহার, কৃষিপণ্যের মজুতদারী কালোবাজারি বন্ধ, সার, ডিজেল, বিদ্যুৎসহ কৃষি উপকরণের দাম কমানোর দাবি নিয়ে এই বনধ ডেকেছে কৃষক সংগঠন ৷ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কলকাতা থেকে হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, শিলিগুড়িতে বনধের সমর্থনে পথে নামল বামেরা ৷ কোথাও জোরপূর্বক বাস আটকে দেওয়া হল ৷ কোথাও আবার রেললাইনের উপর পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে সিপিআইএম কর্মীরা ৷ কলকাতার বিধান সরণিতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বামেরা ৷
রানিগঞ্জ, পশ্চিম বর্ধমান
সকাল থেকেই পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে ধর্মঘটের প্রভাব দেখা গিয়েছে ৷ সকাল থেকেই সিপিএম সমর্থকরা রাস্তায় নেমে মিনিবাস আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে ৷ রানিগঞ্জ থেকে আসানসোলগামী বাসগুলিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় । সিপিএম সমর্থকরা হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে ৷ বাস বন্ধ হলেও অন্যান্য যানবাহন রাস্তায় দেখা গিয়েছে ৷ এলাকায় বনধের খুব একটা প্রভাবও পড়েনি । রানিগঞ্জ বাজারের দোকানপাট খোলা রয়েছে ।
হুগলি
হুগলিতে একাধিক জায়গায় বনধের প্রভাব পড়েছে ৷ কোথাও রেল অবরোধ, কোথাও জিটি রোডে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছে বনধ সমর্থকরা । পাণ্ডুয়া, চুঁচুড়ার বিভিন্ন জায়গায় বনধের সমর্থনে অবরোধ, মিছিল দেখা গিয়েছে । সকাল আটটা থেকে রবীন্দ্রনগরে জিটি রোড অবরোধ করে বনধ্ সমর্থকরা । রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয় । হুগলি ও চুঁচুড়া স্টেশনের মাঝে চারের গোরায় রেললাইন অবরোধ করে বনধ্ সমর্থকরা । চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর মগরা, উত্তরপাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে ৷ চুঁচুড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে কোনও বাস চলাচল করেনি । উত্তরপাড়ায় ও বৈঁচিতে জিটি অবরোধ ও বিক্ষোভ করে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা ।
শিলিগুড়ি
ভারত বনধের তেমন প্রভাব দেখা গেল না শিলিগুড়িতে । দিনের প্রথমার্ধে দোকানপাট কিছুটা বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খুলতে শুরু করে বাজারহাট, অফিস, কাছারি । তবে রাস্তায় তুলনামূলক বেসরকারি বাস কম ৷ যদিও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের সমস্ত বাস চলাচল করছে । পাশাপাশি সমস্ত রুটে বেসরকারি ও ছোট গাড়ি চলাচল করতে দেখা গিয়েছে । বনধের সমর্থনে সকাল সকাল শিলিগুড়িতে পথে নামে এসইউসিআই, অল ইন্ডিয়া কিষাণ মজদুর সংগঠন, সিপিআইএমএল সহ অন্যান্য বাম শরিক দলগুলি ।
মালদা
ভারত ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব দেখা যাচ্ছে মালদা শহরে । রথবাড়ি মোড়ে পিকেটিং করে বনধ সফল করতে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানান বাম-কংগ্রেস সমর্থকরা । মালদা শহরের রাস্তায় সেভাবে বেসরকারি বাস চোখে পড়েনি ৷ তবে সরকারি বাস যথারীতি চলছে । হেলমেট পরে চালক সরকারি বাস চালালেও যাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা । এখনও পর্যন্ত শহরের দোকানপাট সেভাবে খুলতে দেখা যায়নি । অন্যান্য দিনের তুলনায় খানিকটা শুনশান মালদা শহরের রাস্তা । সরকারি দফতরের সামনে পতাকা লাগিয়ে বিক্ষোভ করতেও দেখা যায় বনধ সমর্থকদের ।
পুরুলিয়া
সকাল থেকে বেসরকারি বাস রাস্তায় না নামলেও আপাতত স্বাভাবিক রয়েছে সরকারি বাস পরিষেবা । টোটো, অটো সহ ছোটখাটো যানবাহনের দেখা মিলছে পুরুলিয়ার রাস্তায় । সবজি বাজার থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারগুলিও স্বাভাবিক রয়েছে । তবে পথঘাটে লোকজনের আনাগোনা কম ৷