আসানসোল, 11 অগস্ট : হাতে বর্ণপরিচয়, খাতা, পেন । সামনে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা অ, আ... ৷ শিক্ষক আরপিএফ আধিকারিক ৷ আর বাংলা শিখছেন রেলের অবাঙালি আরপিএফ জওয়ানরা । এমনই ছবি দেখা গেল আসানসোল রেল ডিভিশনের অন্দরে ৷ ভাষা যাতে সমস্যা না হয়ে দাঁড়ায় সেই কারণেই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন রেলের আরপিএফ আধিকারিকরা ।
বাংলা পক্ষ সহ বিভিন্ন সংগঠন বারবার দাবি করেছিল রেল কর্মীদের বাংলা বলতে হবে ৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় ভাষাগত সমস্যার জন্য হিন্দিভাষী রেল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অসুবিধা হয় যাত্রীদের ৷ অনেকেই ভাবে রেলকর্মীরা দুর্ব্যবহার করছে ৷ এবার এই সমস্যা দূর করার জন্য আরপিএফ কর্মীদের বাংলা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন আসানসোল রেল ডিভিশনের আধিকারিকরা ৷ আসানসোল রেল ডিভিশনের সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্রের উদ্যোগে এই বাংলা ক্লাস শুরু হয়েছে ।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল ডিভিশনে মোট 1 হাজার 200 আরপিএফ কর্মী আছেন । এছাড়াও রয়েছে 83 জন মহিলা কর্মী । এদের মধ্যে 700 জনই অবাঙালি । যাঁরা বাংলা ভাষা বলতে, লিখতে বা পড়তে জানেন না, তাঁদেরই বাংলা ভাষা শেখানোর কাজ শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যেই অবাঙালি আরপিএফ কর্মীদের বর্ণপরিচয় বই সংগ্রহ করতে বলা হয়েছিল । অনেকেই সেই বই সংগ্রহ করে বাংলা ক্লাস করতে শুরু করেছেন । আরপিএফদের মধ্যে যারা বাংলা, হিন্দি দুটি ভাষায় খুব দক্ষ তাঁরা মূলত এই ক্লাস নিচ্ছেন । আরপিএফ আধিকারিক দীপঙ্কর দে, অলোক গরাই, মহিলা সাব ইনস্পেক্টার শুভ্রা দে, নন্দিতা সহ ধর্মেন্দ্র প্রসাদ এবং অন্যরা বাংলা শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছেন । উৎসাহ নিয়েই আরপিএফ কর্মীরা বাংলা ক্লাস করছেন প্রত্যহ ।
আরও পড়ুন, Rabindranath Tagore : দুর্গাপুরে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির উপরেই জুতোর বিজ্ঞাপন, সমালোচনার ঝড়
চন্দ্রমোহন মিশ্র জানিয়েছেন, যেহেতু আসানসোল রেল ডিভিশন বাংলা, ঝাড়খণ্ড এবং বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত, সেক্ষেত্রে হিন্দি জানার পাশাপাশি বাংলা ভাষাও জানতে হবে । যাত্রীদের সঙ্গে তাঁর মাতৃভাষায় কথা বললে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায় সহজেই । এছাড়াও রেল সুরক্ষার স্বার্থে ভাষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম । তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকাগুলিতে অনেক সময় রেলে পাথর ছোড়া হত । মূলত গ্রামবাসীরাই এটা করতেন । সেই গ্রামগুলোতে গিয়ে বাংলায় বোঝানো হয় । এখন আর কেউ পাথর ছোড়ে না ।