দুর্গাপুর, 22 মার্চ: বুধবার আমিন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই দুর্গাপুর মহকুমা আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী দেবব্রত সাঁই আদালত থেকে বেরোনোর সময় সাজা প্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবীরা নিরাপত্তার অভাববোধ করেন এবং বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির (lawyer protest) ডাক দেন।
জানা গিয়েছে, সোমবার আমিন হত্যাকাণ্ডের দোষীদের যাবজ্জীবন শাস্তির নির্দেশ দেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক ৷ সাজা ঘোষণা হতেই সরকারি আইনজীবীদের লক্ষ্য করে সাজা প্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা ঝামেলা শুরু করেন ৷ বিশাল বড় জমায়েতের মাঝে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন উপস্থিত আইনজীবীরা ৷ এরপরেই তাঁরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করেন ৷ এই অবস্থায় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে সরকারি আইনজীবীরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন ৷ বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে থাকবেন তাঁরা ৷
দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অন্যতম সরকারি আইনজীবী তুষার গুপ্ত জানান, "সোমবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে একটি হাই ভোল্টেজ মামলার শাস্তির শুনানি ছিল। আমরা আশা করেছিলাম এই হাই ভোল্টেজ মামলার কথা মাথায় রেখেই সরকারি আইনজীবীদের যথপোযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কিন্তু পুলিশ সেই কাজে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। পুলিশের এই ভূমিকা দেখে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমরা আগামিকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে কর্ম বিরতির ডাক দিলাম।"
আরও পড়ুন: দুর্গাপুর জোড়া খুন মামলায় 8 কয়লা মাফিয়ার যাবজ্জীবন
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে লাউদোহার জোড়া খুন মামলায় অভিযুক্ত আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ঘোষণার পর যখন সরকারি আইনজীবী দেবব্রত সাঁই আদালত ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলেন, ঠিক সেই সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের পরিবারের মহিলারা সরকারি এই আইনজীবীকে দেখে তেড়ে আসেন । এই বিষয়ে ফোনে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দেবব্রত সাঁই বলেন, "পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরকারি আইনজীবীরা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে কর্ম বিরতির ডাক দিচ্ছি। আমাকে শুধু শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়নি পাশাপাশি আমার বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।"
দুর্গাপুরের এসিপি তথাগত পাণ্ডে তড়িঘড়ি ক্ষুব্ধ সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কর্মবিরতি তুলে নিতে অনুরোধ করেন ৷ পাশাপাশি, অভিযুক্ত পাঁচ জন মহিলা, যারা দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বাইরে সরকারি আইনজীবীকে হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ, তাঁদের আটক করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ৷