আসানসোল : বাতাসে শিউলির সুবাস ৷ শরতের ভোরে সবাই মহালয়া শোনায় মত্ত ৷ পিতৃপক্ষের শেষ, দেবীপক্ষের শুরু ৷ পুজো আসছে ৷ আপামর বাঙালি আগমনির সুরে মেতে ৷ তখন নিরঞ্জনের সুর শোনা যায় আসানসোলের ধেনুয়া গ্রামে ৷ বোধনের দিনই মায়ের নিরঞ্জন হয়ে যায় এখানে ৷
হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামের কালিকৃষ্ণ আশ্রম । দামোদরের ধারে এই মনোরম আশ্রমেই আয়োজন করা হয় দুর্গাপুজোর । মা এখানে কুমারী রূপে পূজিত ৷ 1937 সালে পুজোর উদ্বোধন করেন কালিকৃষ্ণ সরস্বতী ৷ আশ্রমের সেবাইতরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছিলেন বাবা ৷ মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনিই এই পুজোর প্রচলন করেন ৷ আশ্রমের কালী ও শিবমন্দিরও তৈরি করেন ৷ এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য ৷ স্কুলও গড়ে তুলেছিলেন তিনি ৷ মাঝে 1973 সাল থেকে পুজো বন্ধ হয়ে যায় ৷ পরে 1979 সাল থেকে আবার পুজো শুরু হয় ৷
![image](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/wb-asn-02-mahalaya-spl-durga-7203430_28092019160032_2809f_1569666632_567.jpeg)
এই পুজো একদিনেই হয় ৷ পিতৃপক্ষে বোধন হয় আর দেবীপক্ষে নিরঞ্জন ৷ মহালয়ার আগের রাতে অমাবস্যা লাগলে প্রথমে কালীপুজো করা হয় । কালীপুজোর শেষে ভোরবেলায় নবপত্রিকাকে দামোদরে স্নান করিয়ে নিয়ে আসা হয়৷ মায়ের ঘটও প্রতিষ্ঠা করা হয় ৷ এরপর মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনায় শুরু হয় মা দুর্গার পুজো । একইদিনে নিয়ম করে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী পুজো হয় ৷ এইদিনই প্রতিমার নিরঞ্জন দেওয়া হয় ৷ দেবীর রূপও এখানে আলাদা ৷ মাকে এখানে কুমারী রূপে পুজো করা হয় ৷ তাই মায়ের পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী,গণেশ, কার্তিক কেউ নেই ৷ দু'পাশে শুধু দুই সখী রয়েছেন জয়া ও বিজয়া ৷ নেই মহিষাষুরও । তাই মা এখানে মৃন্ময়ী ৷ মুখে প্রশান্তির ছাপ ৷
সাড়ম্বরে সারাদিন ধরে চলে মায়ের আরাধনা ৷ আশপাশের গ্রামের লোকজনও এসে যোগ দেয় পুজোয় ৷ ঠাকুর দালানে বসে সবাই একসঙ্গে খিচুড়ি ভোগ খায় ৷ একদিনের পুজোতেই মেতে ওঠে ধেনুয়াবাসী ৷