দুর্গাপুর, 3 ডিসেম্বর: ঝাঁ-চকচকে শহর দুর্গাপুর একসময় স্মার্টসিটি প্রতিযোগিতার দৌড়ে ছিল ৷ যে শহরে শপিংমল, বহুতল আবাসন, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে মাল্টি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল, এমনকি অসংখ্য কলকারখানা রয়েছে ৷ কিন্তু, এই দুর্গাপুর পৌরনিগমের মধ্যেই একটা অংশ রয়েছে, যেখানে উন্নয়নের বিন্দুমাত্র ছোঁয়া পৌঁছায়নি ৷ পৌরনিগমের অংশ হয়েও বিছিন্ন দ্বীপের মতো পড়ে 25 নম্বর ওয়ার্ডের মোজরাকোঁন্দা আদিবাসী পাড়া (Mojrakonda Tribal Area of Durgapur Corporation) ৷ সেখানে যেদিকেই তাকানো যায়, শুধুই নেই আর নেই এর অভিযোগ ৷ পানীয় জল, রাস্তার আলো, বিদ্যুৎ পরিষেবা, নিকাশি, শৌচালয় এবং স্কুল ৷ সাধারণ এই নাগরিক পরিষেবাগুলি পান না, এই এলাকার 50টি পরিবার (No Basic Development in Mojrakonda Tribal Area) ৷
সম্প্রতি দুর্গাপুর পৌরনিগমের প্রশাসক কমিটির তরফে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের আয়োজন করা হয় 25 নম্বর ওয়ার্ডে ৷ সেই দুয়ারে সরকার আয়োজন করতে গিয়ে পৌরনিগমের প্রতিনিধি দলের নজরে আসে মোজরাকোঁন্দা আদিবাসী পাড়ার বেহাল দশা ৷ সেই দলই পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডে চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়কে পুরো বিষয়টি জানান ৷ সেই খবর পেয়ে সম্প্রতি দুর্গাপুর পৌরনিগমের 25 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দীপঙ্কর লাহাকে নিয়ে সরেজমিনে মোজরাকোঁন্দা আদিবাসী পাড়া ঘুরে দেখেন প্রশাসক বোর্ডে চেয়ারপার্সন ৷
এলাকা পরিদর্শন করে তিনি জানান, সবার আগে এলাকায় থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার প্রয়োজন ৷ ছোট ছোট বাচ্চাদের নিরাপত্তা আগে ৷ এই স্কুলের দেওয়ালগুলিতে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে ৷ যেকোনও দিন তা ভেঙে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ৷ এমনই আশঙ্কাপ্রকাশ করলেন খোদ চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় ৷ সেই সঙ্গে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে দ্রুত পৌরনিগমের তরফে রাস্তার পাশে 7-8টি ট্যাপ কলের বন্দোবস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত মডেল গ্রাম
তবে, এই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনও ভালো রাস্তা নেই ৷ যা নিয়ে বিদায়ী কাউন্সিলর তথা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দীপঙ্কর লাহাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ৷ তাঁর দাবি, 2017 সালে জমি অধিগ্রহণ করে এলাকায় রাস্তা তৈরির জন্য 18 লক্ষ টাকার ফান্ড পাশ করানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, সেই সময় আদিবাসী এই এলাকার লোকজনই আপত্তি তোলেন বলে পালটা অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ তাঁর দাবি, সেই সময় প্রশাসনের কাছে যে দাবি জমিদাতারা রেখেছিল, তা পূরণ করা কখনই পৌরনিগমের পক্ষে সম্ভব ছিল না ৷ তবে, 25 নম্বর ওয়ার্ডের এই 50টি পরিবার পর্যন্ত উন্নয়ন যে এক ফোঁটাও পৌঁছায়নি তা স্বীকার করে নিয়েছেন পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডে চেয়ারপার্সন ৷