দুর্গাপুর, 29 অগস্ট: নিষিদ্ধপল্লিতে সন্দেহভাজন কিশোরী ৷ সোমবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থানা এলাকার নিষিদ্ধপল্লিতে এক কিশোরীর ঘোরাঘুরি দেখে এলাকার অন্য় মহিলাদের সন্দেহ হয় ৷ তাঁরা প্রথমে ওই নাবালিকাকে দুর্বার মহিলা সমিতির কার্যালয় নিয়ে যান ৷ মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় দুর্গাপুর থানার পুলিশকে ৷ পুলিশ এসে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে ৷ পুলিশের অনুমান, ওই কিশোরী নাবালিকা বাংলাদেশের বাসিন্দা ৷ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, ওই নাবালিকার বাড়ি বাংলাদেশে ৷ তাকে দুর্গাপুরের একটি বেকারি কারখানায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এ রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল ৷ এই অভিযোগেই পানাগড় থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । ধৃতদের মধ্যে এক মহিলা ও দুই যুবক আছে ৷ যৌন পেশার সঙ্গে যুক্ত মহিলার নাম সাইনুর বিবির ঘরে নাবালিকাকে রাখা হয়েছিল ৷ সেই মহিলাকেই গ্রেফতার করল পুলিশ । তার স্বামী মুস্তাক আহমেদকে পানাগড় থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়েকে বিক্রি করে প্রেমিককে বিয়ে! মায়ের খোঁজে পুলিশ
গ্রেফতার হওয়া আরেক যুবকের নাম পাপ্পু রজক ৷ সাইনুর বিবি, তার স্বামী মুস্তাক ও পাপ্পু- ওই নাবালিকাকে নিষিদ্ধ পল্লিতে নিয়ে আসে বলে জানা গিয়েছে ৷ অভিযুক্ত পাপ্পুর বাড়ি দুর্গাপুর থানা এলাকার ভিড়িঙ্গিতে ৷ পুলিশ সূত্রে আরও খবর, এই নাবালিকাকে বেশ কয়েক মাস আগে দুর্গাপুরের একটি বিউটি পার্লারে নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানে পার্লারের আড়ালে ওই নাবালিকাকে দেহ ব্যবসার কাজেও যুক্ত করা হয় ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে যৌনপল্লিতে যায় ৷ সাইনুর বিবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কাঁকসা থানা এলাকার পানাগড় থেকে আরও দু'জনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ সবাইকে দুর্গাপুর থানায় নিয়ে আসা হয় ৷ স্থানীয় যে দালালের মাধ্যমে এই নাবালিকাকে যৌনপল্লীতে নিয়ে আসা হয় , সেই দালালই পাপ্পু রজক । যার বাড়ি দুর্গাপুর থানা এলাকার ভিড়িঙ্গিতে।
সোমবার বিকেল থেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয় ৷ দুর্গাপুরের এসিপি তথাগত পাণ্ডে বলেন, "পুলিশ এক নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে ৷ প্রাথমিকভাবে তার বাড়ি বাংলাদেশে বলে জানা গিয়েছে ৷ এর পিছনে একটা বড় চক্র কাজ করছে ৷ সেই চক্রের তিনজনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে ৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷ ওই নাবালিকা-সহ সবাইকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে ৷ তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু বলা সম্ভব নয় ৷"
পুলিশ আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, এখনও নারী পাচার চক্র সক্রিয় । তবে দুর্গাপুর দুর্বার সমিতি প্রশংসার দাবি রাখে ৷ কারণ তারাই এই নাবালিকাকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেয় ৷ তারপরেই প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হয় ৷ গ্রেফতার হওয়া এই দুজন 'দালাল'কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে এই নারী পাচার চক্রের কতজনকে গ্রেফতার করতে পারে, সেটাই দেখার ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকা খুনে উত্তপ্ত মাটিগাড়ায় অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর, বনধের ডাক বিজেপির