রানিগঞ্জ ও কলকাতা, 28 জুন: পটনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগদানের পর নানা জল্পনা দেশজুড়ে। তবে কি আলাদা ফ্রন্ট তৈরি করে বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে বিরোধী শক্তিরা একজোটে ! মঙ্গলবার রানিগঞ্জে এই জোট গঠন নিয়ে জল্পনায় জল ঢেলে দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । তিনি স্পষ্ট জানান, বিজেপি বিরোধী দলগুলি দেশে অরাজকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলেও জাতীয় স্তরে কোনও জোট হবে না । পাশাপাশি রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করবে সিপিএম । বুধবার কলকাতাতেও তাঁর মুখে একই কথা শোনা গিয়েছে ৷
এদিন কলকাতা প্রেসক্লাবে তিনি বলেন, "জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট হবে না । পটনায় বৈঠক হয়েছে । সিমলাতেও বৈঠক হবে । কিন্তু কোনও জোট হবে না । জাতীয় স্তরে কোনও জোট হচ্ছে না । বরং, বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাকে ইস্যু করে সাধারণ মানুষকে জাগ্রত করা হবে ।" তিনি আরও জানান, এ রাজ্যের ক্ষেত্রেও বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে বামফ্রন্ট লড়াই করবে।
সেলিমের কথায়, পটনায় বৈঠক হল, এরপর সিমলায় বৈঠক হবে । আগে যে বৈঠকগুলো হয়েছে তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা তৃণমূল অংশগ্রহণ করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, বিজেপি বিরোধী কোনও শিবিরে থাকব না। কর্ণাটক নির্বাচনের পরে তৃণমূল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী বৈঠকে হাজির হচ্ছে । না-হলে পার্লামেন্টের দু'টো, তিনটে সেশনে বিরোধীদের বৈঠকে তিনি হাজির ছিলেন না।
সেলিম এদিন দাবি করেন, মমতা বেশি উৎসাহী ছিলেন তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে। কিন্তু বাম ও কংগ্রেস কোনওরকমের জোটে আপত্তি জানিয়েছে। সেলিম জানান, তিনি একারণে অখিলেশ যাদবের কাছে গিয়েছেন। ওয়াইএসআরের কাছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির কাছেও গিয়েছিলেন। বিজেপি বিরোধী মানুষকে দেশে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তার জন্য কোনও জোট হবে না। সিপিএমের স্পষ্ট কথা, জাতীয় স্তরে কোন জোট হবে না। কিন্তু কেন তাহলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ?
আরও পড়ুন: আবার হুইলচেয়ারে বসে, মাথায় ফেট্টি বেঁধে ভোটপ্রচার করবেন না তো ? মমতাকে কটাক্ষ সেলিমের
প্রশ্নের উত্তরে সেলিম জানান, এই যে মণিপুরে আগুন জ্বলছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, কুস্তিগীররা রাস্তায় বসে আছে, ভাগাভাগি হানাহানির রাজনীতি হচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রকে এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে নষ্ট করা হচ্ছে। সেটাকে বাঁচাতে বেশিরভাগ মানুষকে এক হয়ে এই কথা বলতে হবে। সেখানে তৃণমূলের অন্য কোনও পন্থা নেই তাই ওই ধরনের বৈঠকে তাঁকে আসতে হচ্ছে ।" যদিও বিজেপি বিরোধী বৈঠকে একসঙ্গে গেলেও রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন মহম্মদ সেলিম ।