আসানসোল, ২০ ফেব্রুয়ারি : নিজেকে CRPF জওয়ান বলে পরিচয় দিয়েছিলেন বাঁকুড়া সোনামুখীর বাসিন্দা জয় গাঙ্গুলি। এমন কী, পুলওয়ামার সেনা কনভয়ে হামলার ঘটনার সাক্ষী ছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন। গতকাল সকাল থেকে শিরোনামে ছিল খবরটি। যদিও, দুপুর গড়াতেই বদলে যায় চিত্রটা। টিভিতে এই খবর দেখা মাত্রই সোনামুখীর বাসিন্দারা আপত্তি তোলেন। জানা যায়, জয় কোনও CRPF জওয়ান নন। এমন কী, আদতে তিনি কী করেন তাও স্পষ্টভাবে জানাতে পারেনি তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার রাতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন জয়। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর স্ত্রী শ্রাবণী ভরতি রয়েছেন ওই হাসপাতালে। তাঁকে দেখতেই হাসপাতালে আসেন জয়। জলপাই রঙের পোশাক, পায়ে জওয়ানদের জুতো ও তাঁর চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ দেখে সবাই তাঁকে জওয়ান বলেই ভেবে নিয়েছিল। পাশাপাশি আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার, চিকিৎসক ও অন্যরাও তাঁর আচরণে বিভ্রান্ত হন। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার সময় তিনি সেখানে ছিলেন বলে বিশ্বাস করতে শুরু করেন সবাই। অনেকে আবার তাঁকে হাসপাতালেই সংবর্ধনা দেন।
কিন্তু, চিত্রটা বদলে যায় দুপুরের পর থেকে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর দেখানোর পর বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দারা জয় গাঙ্গুলিকে চিনতে পারেন। তাঁরা বলেন, জয় গাঙ্গুলি কোনও CRPF জওয়ান নন। বরং তিনি কী করেন সেটা কারও কাছেই পরিষ্কার নয়। এরপর জয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর মায়ের বক্তব্য, "ছেলে CBI-তে কাজ করে।" অন্তত তাঁকে সেটাই জানিয়েছিলেন জয়। আবার তাঁর ভাই জানিয়েছেন, সপ্তাহ দু'য়েক আগে তাঁর কাছে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন জয়। ফলত, সে সময় জয়ের পুলওয়ামা থাকার দাবি সত্য কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এদিকে গতকাল দুপুরের পরই আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান জয়। ফোন করলেও নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। সন্ধের দিকে ফের হাসপাতালে আসেন জয়। তখন তাঁকে দেখতে পেয়ে ঘিরে ধরেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্য রোগীর পরিবারের সদস্যরা। তখনও তিনি নিজেকে CRPF জওয়ান বলে দাবি করেন। যদিও সেই সংক্রান্ত কোনও পরিচয় পত্র বা নথি তিনি দেখাতে পারেননি। এদিকে, মা ও ভাইয়ের বক্তব্য শোনার পরেই জয় ভেঙে পড়েন। যদিও ১৫ দিনের মধ্যে স্বপক্ষে প্রমাণ দেবে বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁর কথায় অসঙ্গতি দেখে হাসপাতাল চত্বরে মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা। ঘটনাস্থানে পৌঁছায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। জনতার হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।