দুর্গাপুর, 13 সেপ্টেম্বর: কথিত আছে, ভগবান শ্রী রামচন্দ্র 108টি পদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। তাই আজও দুর্গোৎসবের সন্ধি পুজোর সময়ে 108টি পদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার আরাধনা হয় । তবে এবার বৃষ্টির অভাবে পদ্ম চাষ ব্যাহত। ফলত বিপাকে পড়েছেন পদ্ম চাষীরা। আশঙ্কা, পুজো উদ্যোক্তাদরেও চড়া দামে পদ্মফুল কিনতে হতে পারে ৷
করোনা অতিমারির সময়ে দুর্গোৎসব ভাটা পড়েছিল অনেকটা ৷ তার ফলে পদ্ম চাষিরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন পদ্ম চাষ। কিন্তু অতিমারি পেরিয়ে আবারও লক্ষ্মীলাভের আশায় বুক বেঁধেছিলেন পদ্ম চাষীরা। কিন্তু এবার বর্ষায় কম বৃষ্টি হওয়া তাদের আশায় জল ঢেলে দিয়েছিল। যার অন্যতম কারণ কম বৃষ্টি ৷ এর ফলে পুকুরে পদ্মের বীজ ছড়ালেও তা শুকিয়ে যাচ্ছে ৷
দুর্গাপুর মহকুমার কাঁকসা, অন্ডাল, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক এর বিভিন্ন জলাশয়ে বহুকাল ধরে পদ্ম চাষ করে আসছেন প্রায় শতাধিক পদ্মচাষি । প্রতি বছরে মতো এই বছরেও পুকুরে পদ্মের বীজ ছড়িয়েছিল ৷ বিশেষ করে জৈষ্ঠ্য মাসে যে সময় পদ্মের বীজ ফেলা হয় পুকুরে সেই সময়েই বৃষ্টির প্রয়োজন হয় ৷ কিন্তু এ বার জৈষ্ঠ মাস কেটেছে অনাবৃষ্টিতে । আর সেই কারণেই যে সমস্ত জলাশয়ে পদ্মচাষ হয় সেখানে কেবল দেখা মিলছে পদ্ম পাতার ৷ পদ্ম কুঁড়ি থাকলেও কোনও লাভ হয়নি ৷ যতদূর চোখ যায় হাজার হাজার পাতার মাঝে উঁকি দিচ্ছে গুটিকতক পদ্ম ৷ আর তাতেই মাথায় হাত পড়েছে পদ্ম চাষিদের ।
আরও পড়ুন: পাঁকে নয়, খোলা ছাদে পদ্ম ফুটিয়ে তাক লাগালেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া
এই প্রসঙ্গেই পদ্মচাষি মথুরা বাদ্যকর বলেন, "প্রায় 25-30 বছর পদ্ম চাষ করছি ৷ জৈষ্ঠ্য মাস থেকে বৃষ্টি হয়নি। পুকুরে জল ছিল না। অল্প জলে পদ্মের বীজ ফেলেছিলাম কিন্তু সেই বীজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এবার পদ্মের যোগান দেওয়া খুব কঠিন। পদ্ম ফুলের দামও বেড়ে যাবে অনেকটাই । ফুলের কুঁড়ি দেখা যাচ্ছে না ৷" জলাশয়ে পদ্মের আকাল অথচ আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন পরেই দুর্গোৎসবে চাই পদ্মের জোগান ৷ এমতাবস্থায় এখন দেখার এত পদ্মের জোগান এবার কীভাবে দেন পদ্ম চাষিরা।