দুর্গাপুর, 16 মার্চ: স্কুল আছে, শিক্ষক আছে, পড়ুয়াও আছে, কিন্তু নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ । পাঁচটি শ্রেণির এখন ভরসা বলতে একটাই ক্লাসঘর । ছবিটি পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসার বিদবিহারের নবগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের । এই বিদ্যালয়ের বেশ কিছুটা অংশ ভাঙা পড়েছে অজয় নদীর উপর স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের কাজের জন্য। যার জেরে এখন পাঁচটি শ্রেণির পড়ুয়াদের একসঙ্গে নিয়ে পঠন-পাঠন চালানোয় চরম সম্যসার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের ৷ পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে গরমের মধ্যে পড়াশুনা করতে অস্বস্তি বোধ করছে পড়ুয়ারাও । ওই বিদ্যালয়ে বর্তমানে রয়েছে 23 জন পড়ুয়া । রয়েছেন 2 জন স্থায়ী শিক্ষক (Lack of class rooms for students in Kanksa school) ।
সরকারের কাছে শ্রেণিকক্ষ ও আরও শিক্ষকের আবেদন করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ৷ অসীমকুমার দে দাবি করেন, "অজয়ের স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য বিদ্যালয়ের বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে পড়েছে । সেই জন্য সমস্ত শ্রেণির পড়ুয়াদের একসঙ্গে নিয়েই পঠন-পাঠন করাতে হচ্ছে । এর ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে পড়ুয়াদেরও ।" যদিও বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে বলেও তাঁর দাবি ।
অন্যদিকে অভিভাবকদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে সেভাবে পঠন-পাঠন হয় না । বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই । তৃণমূলের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ব্রিজ নির্মাণের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে । সেই সমস্যা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে । বর্তমান রাজ্য সরকার আদিবাসী সম্প্রদায় ভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার জন্য বহু পরিবর্তন আনার কথা বলেছে । কিন্তু কাঁকসার জঙ্গলমহলে একটি ক্লাসরুমে দু'জন শিক্ষক একসঙ্গেই পাঁচটি শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পড়ানোর এই ছবি যেন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার দৈন্যদশাকে ফুটিয়ে তুলছে ।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিখিল ডোম জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই খবর পেয়েছেন অজয়ের উপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য বিদবিহার অঞ্চলের একটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । সেই বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণ-সহ বিদ্যালয়কে নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য তাঁরা সরকারিভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি । খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও নিখিল ডোম আশ্বাস দেন ।
অভিভাবক ধরমি রুইদাস বলেন, "একটা ক্লাসরুমে আলাদা আলাদা শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে পড়াশুনা হয় না । আমরা তাই আবেদন জানাচ্ছি বারবার যাতে করে আলাদা আলাদা ক্লাসরুমে তাদেরকে পড়ানো হয় । এরকম সমস্যা আজ প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলছে ।" কিন্তু অভিভাবকরা বলবেন কাকে? সবাই এই দুরবস্থার কথা জেনেও কার্যত দায় এড়াচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ । যখন রাজ্য সরগরম শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে, তারই মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার এই ছবিতে নিন্দার ঝড়় উঠেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলাজুড়ে ৷
আরও পড়ুন: 50 পড়ুয়ার স্কুলে একজন শিক্ষক, নাজেহাল হেডমাস্টার