আসানসোল, 19 অগস্ট: গরু পাচার মামলাকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করতে চেয়েছিল ইডি। তা নিয়ে আবেদনও জমা করে আসানসোল সিবিআই আদালতে। শনিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। আর শুনানিতে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। বিচারকের সাফ জিজ্ঞাসা "কোন অধিকারে আপনারা এই মামলার তদন্ত করছেন? কেন্দ্রীয় সরকার কি কোনও ক্ষমতা দিয়েছে আপনাদের?" এই প্রশ্নের সাপেক্ষে নির্দিষ্ট নথি দিতে না পারায় ব্যাকফুটে ইডি। এর জেরে শুনানি আটকে যায়। পরবর্তী শুনানিতে ইডিকে তথ্য-সহ জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।
গত 28 জুলাই গরু পাচার সংক্রান্ত সমস্ত মামলা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে নিয়ে যেতে চেয়ে আসানসোল সিবিআই আদালতে আবেদন করেছিল ইডি। শনিবার সেই আবেদনের শুনানি ছিল। এদিনের শুনানিতে সওয়াল-জবাবে অংশ নেন ইডি'র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র, অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ এবং সায়গলের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু। এছাড়াও মামলা চলাকালীন কোর্টে উপস্থিত ছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য ও সিবিআই আইনজীবী রাকেশ কুমার।
- বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এদিন প্রথমেই সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্যের কাছে জানতে চান, গরু পাচার মামলায় এখনও পর্যন্ত কতগুলো চার্জশিট জমা পড়েছে?
- সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, একটি সম্পূর্ণ চার্জশিট ও চারটি সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
- বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, চার্জশিটে কতজন সাক্ষী রয়েছেন?
- সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, প্রায় পাঁচশো সাক্ষী রয়েছে চার্জশিটে।
- এরপরেই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ইডি'র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে প্রশ্ন করেন, এই মামলার তদন্ত আপনারা কোন অধিকারে করছেন? কেন্দ্রীয় সরকার কি আপনাদের কোনও ক্ষমতা দিয়েছে ? যদি দিয়েছে তাহলে নথি দেখান। পাশাপাশি বিচারক বলেন, "আপনারাই কেন, তাহলে এনআইএ বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন নয়, তার ব্যাখ্যা করুন।" বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আরও বলেন, "এই মামলার অধিকাংশটাই সিবিআই আদালতে, তাহলে কী করে আপনারা নিজেদের ইচ্ছে মতো কোনও কোর্টে মামলা নিয়ে যেতে চাইছেন? তাও আবার পাঁচশো সাক্ষীকে সঙ্গে করে। এতে বিচার হবে না, দ্রুত ট্রায়ালও হবে না।" বিচারকের প্রশ্ন, ইডি কী এইভাবে সুয়োমোটো করে অন্য এজেন্সির মামলাকে অন্য কোনও আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে?
- বিচারকের এই প্রশ্নবাণের কাছে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রের কাছে কোনও নথি ছিল না উত্তর দেওয়ার মতো। তাই তিনি সময় চেয়ে নেন। শুনানির পর অভিজিৎ ভদ্র জানিয়েছেন তাঁর কাছে নির্দিষ্ট কাগজ ছিল না, যা জজ সাহেব চেয়েছিলেন।
- অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানান, বিচারক প্রশ্ন তুলেছেন ইডির অধিকার নিয়ে। আগে ইডি সেই নথি কোর্টে পেশ করুক। তারপর আমি বলব।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এই মামলার পরবর্তী শুনানি 2 সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন। সেই দিন এই মামলায় ইডির ভূমিকা সংক্রান্ত নথি নিয়ে আইনজীবীকে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।