দুর্গাপুর, 8 জুন: তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ। দুর্গাপুরেও তাপপ্রবাহ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ার কারণে হাঁসফাঁস করছেন শিল্পাঞ্চল থেকে খনি অঞ্চলের বাসিন্দারা। দেখা নেই বৃষ্টির। দুর্গাপুরের মানুষও দাবদাহের জেরে কার্যত গৃহবন্দি। এইরকম তাপপ্রবাহের মাঝেই হঠাৎ দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের এ-জোন সেকেন্ডারি ও কণিষ্ক রোডের মাঝামাঝি শিবমন্দিরে বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া হল দু'টি ব্যাঙের বিয়ে ৷ বৃষ্টির আশায় বরুণদেবকে খুশি করতে পুরাণ মেনে দিনক্ষণ দেখে দুই ব্যাঙের বিয়েতে এলাহি ব্যবস্থা ৷
বেজে উঠে সানাই, বাজল তাসা, ব্যান্ড। কন্যাপক্ষ হাজির বিবাহের তত্ত্ব নিয়ে। তৈরি বরপক্ষ। দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে মালাবদল,সিঁদুরদান হয় দুটি ব্যাঙের। বাইরে তখন চলছে ব্যাঙের বিবাহ উপলক্ষে ভূরি ভোজে আয়োজন। পৌরাণিক মতে বৃষ্টির আশায় মহা ধুমধাম করে ব্যাঙের বিয়ে হল দুর্গাপুরের কনিষ্ক শিবমন্দিরে। কন্যাপক্ষ ও বরপক্ষকে সাক্ষী রেখেই সম্পন্ন হল বিয়ে ৷
বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রায় 200 অতিথি। বিয়ে শেষে বর কনেকে ছেড়ে দেওয়া হয় শিব মন্দির সংলগ্ন পুকুরে। দুর্গাপুর বাসীর আশা, এরপরেই প্রসন্ন হবেন বরুণদেব ৷ নামবে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। কন্যাপক্ষের হয়ে উপস্থিত থাকা বনি সাহা বলেন, "সেই প্রাচীন কাল থেকে শুনে আসছি বৃষ্টি না-হলে বরুণদেবকে প্রসন্ন করতে ব্যাঙের বিবাহ দিলে নাকি বৃষ্টি নামে। তাই আমরা এই প্রথা মেনেই শিব মন্দিরে বিবাহ বাসরের আয়োজন করেছি। আমরা কনেপক্ষ বরপক্ষের জন্য সমস্ত কিছুই ব্যবস্থা করেছি, যা একটা বিয়েতে করা হয়।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, বরযাত্রী আসা মাত্রই তাঁদেরকে ঠান্ডা শরবত দেওয়া থেকে শুরু করে দুপুরে ভাত, বেগুনি, ডাল, তরকারি, মাংস, পাঁপড়, চাটনি, মিষ্টি, দই সমস্ত রকম খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। এই এলাকার নয় নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর পল্লব রঞ্জন নাগ বলেন, "প্রচণ্ড গরমের কারণে নাভিশ্বাস উঠেছে। মা ঠাকুমাদের মুখ থেকে শুনে আসছি ব্যাঙের বিয়ে দিলে বরুণদেব প্রসন্ন হন ৷ তাহলে বৃষ্টি নামে। তাই এই বিয়ের আয়োজন।"
আরও পড়ুন: মানবিক গৃহবধূর বানানো সরবতে তেষ্টা মিটছে ট্রাফিক পুলিশদের, আপ্লুত পুলিশ সুপার
বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে দেশের অনেক জায়গাতেই হয়ে থাকে। তবে ইতিমধ্যেই কেরলে ঢুকেছে বর্ষা ৷ আশা করাই যায় খুব তাড়াতাড়ি বাংলাতেও আকাশ ভেঙে নামবে বারিধারা ৷