দুর্গাপুর, 31 মার্চ: অনাথ শিশুর পাশে দুর্গাপুর মহকুমা আদালত। বাবা, মা'র মৃত্যুর পর অনাথ শিশুকে বিমা সংস্থাকে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেন বিচারক শুভজিৎ বসু। বৃহস্পতিবার এই রায় দেয় মহকুমা আদালতের বিচারক। শুক্রবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালত থেকে বললেন আবেদনকারীদের আইনজীবী আয়ুব আনসারী।
2020 সালের 5 মে সিভিক ভলান্টিয়ার সমীরণ নাগ রানিগঞ্জ থানার অন্তর্গত পঞ্জাবি মোড় এলাকায় রাত্রিকালীন টহলদারিতে ছিলেন। দুষ্কৃতী গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থানার অফিসারকে সাহায্য করতে গিয়ে তাঁদের টহলদারি গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়লে সমীরণ গুরুতর আহত হন ৷ পরে তাঁর মৃত্যু হন। ঘাতক ট্রাকের চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তী সময়ে উক্ত ট্রাকের বিমা সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্গাপুর মহকুমা আদলতে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা চলাকালীন মৃত সমীরণের স্ত্রী একাকীত্বের কারণে আত্মহত্যা করেন। নাবালিকা শিশু সন্তান ডোনাকে সঙ্গে নিয়ে মামলা লড়েন সমীরণের মা ও বাবা। বৃহস্পতিবার আদালত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে। মোট 17 লক্ষ 43 হাজার 600 টাকা ঘাতক ট্রাকের বিমা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দেন মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইম ট্রাইব্যুনাল (ফার্স্ট ট্রাক কোর্ট) বিচারক শুভজিৎ বসু। আবেদনকারীদের আইনজীবী আয়ুব আনসারী বলেন, "ক্ষতিপূরণের মামলায় অনেক রায় ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু এই রায়দান অত্যন্ত অর্থবহ। কারণ সমীরণবাবু ও তাঁর স্ত্রী দু'জনেই মারা গিয়েছেন। শুধু তাঁদের শিশু কন্যা ডোনা বেঁচে আছে। ওই শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব আদালত নিশ্চিত করতে প্রায় 10 লক্ষ টাকা নাবালিকার নামে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে স্থায়ী আমানত ওই শিশুর আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।"
আরও পড়ুন: অনাথ শিশু ও প্রবীণদের নিয়ে রাখিবন্ধনে মাতলেন মহকুমা শাসক
তার 18 বছর পূরণ হলে নিজে ব্যবহার করতে পারবে ওই টাকা। বাকি টাকা ওই শিশুর বর্তমান অভিভাবকরা পাবেন। দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারকের এই রায় শোনার পর বহু মানুষের প্রতিক্রিয়া এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করলেন বিচারক। কার্যত এক অনাথ শিশুর পাশাপাশি পুরো পরিবারটিকে বাঁচার রসদ দেওয়া হল ৷ রায়ের পর অভিমত বহু মানুষের। মৃত সিভিক ভলান্টিয়ার এবং তাঁর আত্মঘাতী স্ত্রী তারপর ডোনার ভবিষ্যতের যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল সেই অনিশ্চয়তার মেঘ কাটল এই রায় ঘোষণায়।