দুর্গাপুর, 8 ফেব্রুয়ারি: সিঙ্গুরের ছায়া এবার কাঁকসার পানাগড়ে । পানাগড় শিল্প তালুকে কৃষকদের না-জানিয়ে তাদের উর্বর জমির ওপর দিয়ে কারখানার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার খুঁটি পোঁতা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ৷ খুঁটি পুঁততে বাধা দেয় কৃষকরা ৷ যা নিয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠে এলাকা (Farmers Protest in Panagarh over factory wiring on their land) ৷
পানাগড় শিল্প তালুকের জন্ম হয়েছিল বিগত বাম সরকারের সময়কালেই । পণ্ডালি, সোঁয়াই, কাঁকসা মূলত এই তিনটি মৌজার জমিতেই পানাগড় শিল্পতালুক গঠিত হয়েছে । সেই শিল্প তালুকে বেশ কয়েকটি বেসরকারি কারখানা ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠালাভ করেছে । বুধবার সকালে পানাগড় শিল্প তালুকের বেশকিছু জমির মালিক অভিযোগ করেন, তাদের জমি অধিগ্রহণ না-করেই এবং তাদেরকে কোনও কিছু না-জানিয়েই উর্বর জমির ওপর দিয়ে একটি কারখানার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের খুঁটি পোতা হচ্ছিল । সেই কাজে বাধা দেয় স্থানীয় কৃষি জমির মালিকরা ।
জানা গিয়েছে, কৃষি জমির উপর দিয়ে 1 লক্ষ 32 হাজার ভোল্টের তার নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের । কাঁকসার মাধবমাঠ ও শেরপুর এলাকার একটি বেসরকারি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য এই তার নিয়ে যাওয়ার কাজ হচ্ছিল । কৃষকদের ও জমির মালিকদের না জানিয়েই এই কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের । বুধবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে ডব্লিউবিআইডিসি দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান জমির মালিকরা । জমির মালিকদের অভিযোগ লিখিতভাবে তাদের না জানিয়ে জমির উপর দিয়ে হাই ভোল্টেজ তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে তাদের কোনরকমভাবে জানায়নি । কোন প্রকারে তাদের জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার তারা নিয়ে যেতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন ।
এক জমির মালিক নিমাই পাল বলেন,"কৃষকদের না জানিয়ে তাদের উর্বর জমির ওপর দিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি । আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই এই কাজ করছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ । জমি অধিগ্রহণ করে সরকার । কিন্তু আমরা কৃষি জমির মালিকরা সরকারিভাবে কোনও লিখিত নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত পাইনি । আমাদের জমির জন্য কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তাও স্পষ্ট করে আমাদেরকে জানানো হয়নি । তাই আমরা আজকে বাধ্য হয়ে সকল কৃষি জমি মালিকরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি ।"
এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পানাগড় শিল্প তালুকে । যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি তারা এই বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ করছেন না । এই কাজ সরকারি বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকেই করা হচ্ছে । কিন্তু জমির মালিকদের অভিযোগ, সরকারি কাজ হলে সরকারের পক্ষ থেকে কেনও লিখিত নির্দেশিকা কৃষি জমির মালিকদের দেওয়া হল না? তাহলে কী তাদের জমির জোর করে কেড়ে নিতে চাইছেন? পানাগড় শিল্প তালুকের পাশাপাশি উর্বর জমি অধিগ্রহণ বিভ্রাট ফের একবার সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণ বিতর্ককে উসকে দিল ।
আরও পড়ুন: কাঁকসায় তৃণমূল নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধ সরকারি প্রকল্পের কাজ