দুর্গাপুর, 1 জুন: রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নিজস্ব স্টিল টাউনশিপের প্রিয়দর্শনী ইন্দিরা সরণীর একটি হোটেল লিজে দেওয়া হয় ডিএসপি-র পক্ষ থেকে । সেই হোটেলেই বুধবার রাতে বসেছিল মেগা জুয়ার আসর । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেই মেগা জুয়ার আসরে হানা দেয় দুর্গাপুর থানার পুলিশ । সেখান থেকে বুধবার রাতে গ্রেফতার হয় 11 জন জুয়াড়ি। পুলিশ সূত্রে পাওয়া ওই জুয়াড়িদের নাম মন্ত্রী মণ্ডল (পাণ্ডবেশ্বর), দিলীপ ধীবর (দুবচুড়ুরিয়া),পুজন মুখোপাধ্যায় ( ফুলঝোড়), মহেন্দ্র সিং (পাণ্ডবেশ্বর), রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য (পাণ্ডবেশ্বর), মানিক বিশ্বাস (বেনাচিতি), অমর বন্দ্যোপাধ্যায় (ঝাঁঝরা), স্বপন ধীবর (অণ্ডাল), অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায় (উখড়া), নবকুমার মণ্ডল (উখড়া) ও সাজেন বাগ (জামুড়িয়া) ।
এই জুয়ার আসর থেকে উদ্ধার হয় 10 লক্ষ 313 টাকা । বৃহস্পতিবার ধৃতদের পুলিশি হেফাজত চেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয় । এর আগেও একাধিকবার দুর্গাপুর থানার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জুয়াড়ি ধরা পড়েছে । কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ডিএসপি কারখানার লিজ দেওয়া হোটেলে এইভাবে জুয়ার আসর নজিরবিহীন ঘটনা । জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ডিএসপি কর্তৃপক্ষ এই হোটেলটি যাকে লিজে দিয়েছেন তিনি আবার অন্য আরেকজনকে সিটি লিজে দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন: জুয়া খেলার মেলা ! খেলছেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আট থেকে আশি
উল্লেখ্য, এই হোটেলের গা ঘেঁষেই রয়েছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার নিজস্ব অতিথিশালা । যে অতিথিশালায় এসে থেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, ইস্পাতমন্ত্রী থেকে দেশের তাবড় তাবড় নেতা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সেইল এর পদাধিকারীরা । এহেন মর্যাদাপূর্ণ স্থানের পাশের একটি হোটেলে জুয়ার আসরের কথা শুনে স্তম্ভিত দুর্গাপুরের বহু মানুষ । সমালোচনায় সরব দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি ।
সিটু নেতা সৌরভ দত্ত ফোনে বলেন, "অত্যন্ত লজ্জার ঘটনা । ডিএসপির বহু স্কুল, ঘর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে ৷ সেগুলির ব্যবহার না হওয়ায় তা ধ্বংসের মুখে। অন্যদিকে সম্পত্তি মাফিয়াদের দিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে । আর এইরকম অপরাধ ঘটার পরে ডিএসপি কর্তৃপক্ষের কাছে আইনানুগ এই সংস্থাকে উচ্ছেদ করতে কী কী পথ আছে জানি না । আমরা সিটুর পক্ষ থেকে এই ইস্যুতে কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইব ।"
আরও পড়ুন: সারারাত জুয়ার ঠেকে অভিযান, গ্রেফতার 13
আইএনটিটিইউসি নেতা জয়ন্ত রক্ষিত বলেন, "পুলিশকে ধন্যবাদ যে এই ধরনের অপরাধীদের ধরে ফেলার জন্য । আর ডিএসপির একশ্রেণির আধিকারিক এই সব হোটেলগুলি তাদের মনোমত লোকদের পাইয়ে দিয়ে সুবিধা নিচ্ছে । টাউনশীপের পরিবেশ কীভাবে নষ্ট হচ্ছিল এটা তার প্রমাণ । ডিএসপি কী ব্যবস্থা নেয়, তা দেখছি আমরাও ।" এই ঘটনায় দুর্গাপুর শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ।