আসানসোল, 11 নভেম্বর: গরুপাচার মামলায় (WB Cattle Smuggling Scam) চাপ কি আরও বাড়ল বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির উপর ? এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷ কারণ, এতদিন অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) শুধুমাত্র সিবিআই জেরার (CBI Interrogation) মুখোমুখি হতে হয়েছে ৷ এবার তাঁকে জেরা করার অনুমতি পেয়ে গেল আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সটমেন্ট ডিরেক্টোরেট (Enforcement Directorate) বা ইডি (ED) ৷ এরপর থেকে সংশোধনাগারে গিয়েই অনুব্রতকে জেরা করতে পারবেন ইডি আধিকারিকরা (ED Interrogation) ৷ তাঁদের সেই অনুমতি দিয়েছে আসানসোলের (Asansol) বিশেষ সিবিআই আদালত (Special CBI Court) ৷
শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রতকে ফের একবার পেশ করা হয় ৷ প্রভাবশালী তত্ত্বে আবারও খারিজ হয়ে যায় তাঁর জামিনের আবেদন ৷ বদলে অনুব্রতকে আরও 14 দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (Judicial Custody) পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক ৷ অন্যদিকে, এদিন বিশেষ সিবিআই আদালতেই হাজির ছিলেন ইডি-এর আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র ৷ তিনি ইডি-এর হয়ে আদালতের কাছে অনুব্রতকে জেলে গিয়ে জেরা করার অনুমতি চান ৷ বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ৷
আরও পড়ুন: ফিরহাদের 'বাঘ' সম্বোধনকে হাতিয়ার সিবিআইয়ের, জামিন পেলেন না অনুব্রত
শুনানি শেষ হওয়ার পর ইডি-এর আইনজীবী সংবাদমাধ্যমকে জানান, "যেকোনও দিন সকাল 8টা (আটটা) থেকে বিকেল 5টা পর্যন্ত আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করতে পারবেন ইডি আধিকারিকরা ৷" কিন্তু, প্রশ্ন হল, হঠাৎ ইডি কেন অনুব্রতকে জেরা করতে চাইছে ? তারও জবাব দিয়েছেন তাদের আইনজীবী ৷ তিনি বলেন, "ইতিমধ্যেই গরুপাচার মামলায় সায়গল হোসেন, মণীশ কোঠারি এবং সুকন্যা মণ্ডলকে জেরা করেছেন ইডি আধিকারিকরা ৷ তাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে ৷ আর সেই সূত্র ধরেই অনুব্রতকে জেরা করা দরকার বলে মনে করছে ইডি ৷"
তাহলে কি আগামী দিনে সায়গল হোসেনের মতো অনুব্রত মণ্ডলকেও দিল্লি নিয়ে যাবে ইডি ? এই প্রশ্নের উত্তর আপাতত অধরা হলেও সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াকিবহাল মহল ৷ কারণ, এর আগে সায়গল হোসেনকেও আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি ৷ এরপর আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সায়গলকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় ৷ আপাতত সেখানেই রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের এই দেহরক্ষী ৷
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও (Sukanya Mondal) দফায় দফায় তাঁদের দিল্লির সদর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি আধিকারিকরা ৷ সূত্রের দাবি, সুকন্যা তদন্তকারীদের অধিকাংশ প্রশ্নেরই সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি ৷ বহু প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, উত্তর তাঁর জানা নেই ৷ তবে, 'বাবা' উত্তর জানতে পারেন ! ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, সুকন্যার এই বক্তব্যকেই এখন অনুব্রতর বিরুদ্ধে হাতিয়ার করছে ইডি ৷ স্বাভাবিকভাবে এতে অনুব্রতর উপর আগামী দিনে চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ পঞ্চায়েত ভোটের আগে যা চিন্তা বাড়াবে বাংলার শাসকদলেরও ৷