শিলিগুড়ি, 15 জানুয়ারি: প্রিজন ভ্যানে করে আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অভিযুক্তকে ৷ মাঝ রাস্তায় আচমকা গুলি চালায় সে! গুলি লেগে গুরুতর জখম হন দুই পুলিশকর্মী। আহত দুই পুলিশকর্মীকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে দুই পুলিশকর্মী আপাতত বিপদমুক্ত রয়েছেন বলেই বুধবার রাতে জানালেন উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ যাদব। অন্যদিকে, বিচারাধীন বন্দির কাছে কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশও।
আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে অভিযুক্তের কাছে এল, তার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ সুপার জবি থমাসকে। তবে উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ যাদব জানান, ওই আগ্নেয়াস্ত্র নিজের কম্বলের ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিল। পাশাপাশি, অভিযুক্ত কারাগারেই আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিল নাকি আদালতে তোলার সময় তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার পরই আহত পুলিশকর্মীদের দেখতে নার্সিংহোমে পৌঁছন উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ যাদব, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর-সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই পুলিশকর্মীর মধ্যে নীলকান্ত সরকারের পেটে দু'টো ও দেবেন বৈশ্যর ডানদিকের পাঁজরের নীচে একটি গুলি লেগেছে। বুধবার রাতেই ওই দুই পুলিশকর্মীর অস্ত্রোপচার করা হয়।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজেশ যাদব বলেন, "প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় শৌচালয়ের যাওয়ার কথা জানায় অভিযুক্ত। আর গাড়ি থামার পর একটু দূরে যেতেই সময় নিজের কাছে লুকনো একটি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে দুই পুলিশকর্মীকে গুলি করে পালিয়ে যায় অপরাধী। মোট তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে। তবে দুষ্কৃতী কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। টেকনিক্যাল টিমও কাজ করছে।"
প্রসঙ্গত, বুধবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া কালিবাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। জখম দুই পুলিশকর্মীর নাম নীলকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্য ৷ দু'জনেই করণদিঘি থানায় কর্মরত ৷ আপাতত তাঁরা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কয়েক বছর আগে করণদিঘি থানার খিরকিটোলা গ্রামের বাসিন্দা সুবেশ দাসকে খুন করার অভিযোগ ওঠে সাজ্জাদ আলমের বিরুদ্ধে ৷ এদিন প্রিজন ভ্যানে করে সেই সাজ্জাদ আলমকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ইসলামপুর মহকুমা আদালত থেকে ৷
রায়গঞ্জ সংশোধনাগারে ফেরার পথে সাজ্জাদ আলম শৌচালয়ে যেতে চায় ৷ সেই সময় গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া কালিবাড়ির এলাকায় পুলিশ গাড়িটি দাঁড় করায়। অভিযোগ, ঠিক সেই সময় খুনে অভিযুক্ত সাজ্জাদ আলম গাড়ি থেকে নেমে কিছুটা দূরে গিয়ে কম্বলে লুকিয়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে দুই পুলিশ নীলকান্ত সরকার ও দেবেন বৈশ্যকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় ৷ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন দু'জন ৷ প্রিজন ভ্যানের চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি জখম দুই পুলিশকর্মীকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে যান ৷ পরে সেখান থেকে শিলিগুড়িতে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁদের। আপাতত তাঁরা স্থিতিশীল রয়েছেন ৷