দুর্গাপুর, 20 জানুয়ারি : কন্যাসন্তানের জন্ম দিলে সরকারের তরফে 6 হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু সেই টাকা নিতে যেতে হবে অনাময় হাসপাতালে । বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলার থেকে একথা জানার পরই অনাময় হাসপাতালে সদ্যোজাতকে নিয়ে পৌঁছে গেছিলেন রিমা ও তাঁর পরিবার । তারপর সেখান থেকেই চুরি করা হয় সদ্যোজাতকে । এরপর আজ দুর্গাপুর থেকে এক দম্পতিকে আটক করে পুলিশ । তাদেরও একটি কন্যাসন্তান রয়েছে । গতকালের অনাময় হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনায় এই দম্পতি জড়িত কি না তা জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ।
কয়েকদিন আগে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি হন রায়না থানার সিপ্টা এলাকার বাসিন্দা রিমা মালিক । শুক্রবার তিনি এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন । রবিবার হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয় । এরপর হাসপাতাল থেকে বেরোনোর আগে রিমার পরিবারের সঙ্গে এক মহিলার আলাপ হয় । সেই মহিলা তাদের জানায়, কন্যাসন্তানের জন্ম হলে সরকারের তরফে 6 হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে । তবে, সেই টাকা নিতে যেতে হবে অনাময় হাসপাতালে । আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় 6 হাজার টাকা পাওয়ার আশায় সদ্যোজাতকে নিয়ে অনাময় হাসপাতালে পৌঁছে যান রিমা ও তাঁর পরিবার । সেখানে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন । অভিযোগ, এই সুযোগেই রিমার কন্যাসন্তানটিকে নিয়ে চম্পট দেয় ওই মহিলা ।
অন্যদিকে গতরাতে দুর্গাপুর থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের একটি বাসে শিশু কন্যাকে নিয়ে আসছিল পিঙ্কি বৈরাগ্য । ততক্ষণে অনাময় হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনাটি সব সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে । তাই রাতে পিঙ্কিকে শিশুটিকে নিয়ে যেতে দেখে সন্দেহ হয় বাস কন্ডাক্টারের । তিনি বিষয়টি এ জ়োন ফাঁড়ির পুলিশকে জানান । তারা খবরটি পাওয়ার পর কাঁকসা থানার পুলিশকে জানায় । খবর পেয়ে কাঁকসার বাসকোপার টোলপ্লাজ়াতে বাসটিকে আটকায় পুলিশ । শিশু সহ ওই মহিলাকে নামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চায় । সেইসময় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের কিছু কাগজপত্র দেখালে পিঙ্কিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ ।
পুলিশ পরে জানতে পারে, এই পিঙ্কি বৈরাগ্য অন্তঃসত্ত্বা ছিল একথা ঠিক । কিন্তু গর্ভেই তার সন্তান মারা যায় । তারপর আজ সকালে বেনাচিতি সত্যজিৎ পল্লিতে পিঙ্কি বৈরাগ্যর বাড়িতে যায় পুলিশ । সেখান থেকে পিঙ্কি ও তার স্বামী মণি বৈরাগ্যকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে । যদিও শিশু চুরির ঘটনায় পিঙ্কি জড়িত কি না সেবিষয়ে পুলিশের তরফে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি । এই মুহূর্তে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে অনাময় হাসপাতালের CCTV ফুটেজ ।