আসানসোল, 12 মে: কয়লা পাচারকাণ্ডে ধৃত এক সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর ও প্রাক্তন ইসিএল কর্তার ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে শুক্রবার ৷ তাদের বিরুদ্ধে বেশকিছু তথ্য পেয়েছেন সিবিআই তদন্তকারীরা ৷ যেমন, সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর আনন্দ কুমার সিং এবং ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর টেকনিক্যাল সুনীল কুমার ঝাঁয়ের নাম পায় কয়লা সিন্ডিকেটের ভাউচারে । 2009 সালের ভাউচারে পাওয়া যায় দু'জনের নামে । কিন্তু আদালতে সিবিআই আইনজীবী দাবি করেন ভাউচারগুলি আসলে 2019 সালের ।
সিবিআই-এর দেবি, কোড ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে হত টাকার আদানপ্রদান ৷ ইসিএলের কয়লা চুরিতে মদত দেওয়ার কারণে এই অভিযুক্তরা প্রচুর টাকা পেয়েছিলেন বলে দাবি করে সিবিআই । পাশাপাশি এই মামলায় অতীতে দু'জন অভিযুক্ত বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দীতে এদের নাম বলেছিল ও কয়লার সিন্ডিকেটের উদ্ধার হওয়া নথিতেও এই দুজনের নাম পাওয়া গেছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের । ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর টেকনিক্যাল সুনীল কুমার ঝাঁ 1 কোটি 70 লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন, সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর আনন্দ সিং পেয়েছিলেন 11 লক্ষ টাকা বলে সিবিআইয়ের দাবি । শুধু তাই নয়, টাকা নেওয়ার কথা দুজনেই স্বীকার করেছেন বলে আদালতে দাবি করেছেন সিবিআই আইনজীবী ।
শুক্রবার, আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এই দুই ব্যক্তিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থা ৷ এই দুই ব্যক্তির 4 দিনের সিবিআই হেফাজত চাওয়া হয় ৷ সিবিআই আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন । মামলার পরবর্তী শুনানি 16 মে । কয়লা পাচারকাণ্ডে এর আগে 4 জন ইসিএলের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্তাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই । পরবর্তীকালে তারা হাইকোর্টের রায়ে জামিন পেয়েছেন । কিন্তু বারবার অভিযোগ উঠছিল ইসিএলের কয়লা চুরি হলে তাতে সিআইএসএফের ভূমিকা থেকে যায় । কারণ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআইএসএফ-ই ।
আরও পড়ুন: কুন্তলের চিঠি মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে এখনও স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্ট
এই টাকা নেওয়ার কথা নাকি অভিযুক্তেরা জেরার মুখে স্বীকার করেছে, এমন দাবিও করে সিবিআই । এই দুজনকে জেরা করে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে এমনকি কয়লা পাচারে যুক্ত আরও অনেক ইসিএল কর্তা কিংবা সিআইএসএফ জওয়ানদেরও নাম আসতে পারে এমনটাই মনে করছে সিবিআই । আর সেই কারণেই এই দুজনকে চার দিনের জন্য হেফাজতে চান সিবিআই আইনজীবী । যদিও অভিযুক্ত দুজনের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু চারদিনের হেফাজতের বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন । তাঁর দাবি সিবিআই যখনই তাঁদের ডেকেছে তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করেছে । তাই দু'দিনের হেফাজত দেওয়া হোক । শেষ পর্যন্ত বিচারক অভিযুক্ত সিআইএসএফ ইন্সপেক্টর এবং আধিকারিককে চারদিনের সিবিআই হেফাজত মঞ্জুর করেন, আগামী 16 মে পরবর্তী শুনানি ।