ETV Bharat / state

সুনসান বইপাড়া, নতুন বইয়ের সঙ্গে দোকানে বন্দী কতগুলো স্বপ্নও

অন্যান্য বছর এই সময় বইয়ের দোকানগুলোতে থাকে মানুষের লম্বা লাইন । এমনকী, মধ্যরাত পর্যন্ত অভিভাবকদের বই নেওয়ার জন্য ভিড় উপচে পড়ে দোকানগুলিতে । কিন্তু, এবার কোরোনা আতঙ্কের জেরে সেই বই পাড়াতেই এখন শুধুই নিস্তব্ধতা ৷

author img

By

Published : Mar 27, 2020, 7:33 PM IST

বইপাড়া
বইপাড়া

দুর্গাপুর, 27 মার্চ : শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যমেই পড়ে ঈশান ৷ সেও ঠিক করেছিল কোন বইয়েতে কী রঙের মলাট দেবে, কোন বইয়ে কোন কার্টুনের নেমপ্লেট লাগাবে ৷ সে এবার প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছে ৷ মায়ের কাছে রামায়ণের গল্প শুনলেও এবার প্রথম বইয়ে পড়তে পারবে বলে খুবই উত্তেজিত ছিল সে ৷ কিন্তু, তাও আপাতত বন্ধ ৷

কিছুদিন আগেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করেছে ছেলেটা ৷ ইচ্ছে ছিল সায়েন্স নেবে ৷ কিন্তু অভাবের সংসারে বই কেনার ক্ষমতা নেই বাবার ৷ বাড়িতে যে স্যার পড়াতে আসতেন, কয়েকদিন পরে প্রয়োজনীয় বই নিয়ে আসবেন বলেছিলেন ৷ কিন্তু তা আর হল কই ৷ সব কিছুতেই যে বাধ সাধল কোরোনা ৷ কোরোনা থেকে মানুষ বাঁচাতে দেশে তালা ঝুলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ যার দরুণ জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ সব কিছুই ৷

পড়ার ফাঁকে যে গল্পের বইগুলো পড়ে ফেলবে ঠিক করেছিল মেয়েটি, তা এখন দোকানেই বন্দী ৷ না পাওয়া যাচ্ছে পড়ার বই, আর না গল্পের বই ৷ বইয়ের তাক থেকে ধুলো ঝেড়ে গল্পের বইগুলো নামিয়ে ফের পড়তে শুরু করেছে ৷ কিন্তু, সেই নতুন বইয়ের গন্ধটা বড্ড মন টানছে তার ৷ উপায় নেই ৷ কবে লকডাউন শেষ হবে, তারও ঠিক নেই ৷ বই প্রেমীরা তো বটেই বিক্রি না হলে বইগুলোর কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বই দোকানিও ৷ বাজার-হাট, ওষুধ দোকান খোলা থাকলেও দোকান খোলার অনুমতি নেই বই ব্যবসায়ীদের ৷

স্থগিত রাখা হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ স্থগিত রাখা হয়েছে মাধ্যমিকের খাতা জমা দেওয়াও ৷ রাজ্য সরকারের পক্ষে থেকে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে ফল প্রকাশের দিনও স্থগিত রাখা হয় ৷ অনেক স্কুল মোবাইলের মাধ্যমেই জানিয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীদের ফল ৷ কিন্তু, আর স্কুলে যাওয়া হয়নি পড়ুয়াদের ৷ দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রী অদ্রিজা সরকার জানায়, "খুব মন খারাপ লাগছে । এখনও হাতে নতুন বই পেলাম না । রেজ়াল্ট জানতে পারিনি । নতুন বইয়ের গন্ধ, মলাট দেওয়া, নেমপ্লেট লাগানো কোনও কিছুই নেই । এখন কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ঘরে বন্দী । মোবাইলে এবং টিভিতে কার্টুন আর খবর দেখছি ।"

দুর্গাপুর বেনাচিতিতে বইপাড়ার অবস্থাটাও একইরকম ৷ একেবারে সুনসান । অন্যান্য বছর এই সময় বইয়ের দোকানগুলোতে থাকে মানুষের লম্বা লাইন । এমনকী, মধ্যরাত পর্যন্ত অভিভাবকদের বই নেওয়ার জন্য ভিড় উপচে পড়ে দোকানগুলিতে । কিন্তু, এবার কোরোনা আতঙ্কের জেরে সেই বই পাড়াতেই এখন শুধুই নিস্তব্ধতা ৷ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার পক্ষ থেকে অনেক আগে বই পাঠিয়ে দেওয়া হলেও লকডাউনের জন্য আর দোকান খোলা হয়নি । বই ব্যবসায়ী মলয় দত্ত নিজের অভিমত পোষণ করলেন ঠিক এভাবেই,"বড় ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা । সব বই তোলা হয়ে গেছে । মহাজনকে টাকা মেটাতে হবে । ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনলাইনে রেজ়াল্ট জানিয়ে দেওয়া হলেও যেহেতু বইয়ের দোকান খোলা নিষেধ, তাই আমরা বই বিক্রি করতে পারছি না । তবে বাজারে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষের ভিড় দেখছি, তাতে বই বিক্রি না বন্ধ করলেও চলত । প্রশাসন আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করলে আমরাও ভিড় এড়িয়ে বই বিক্রি করতে পারতাম ।"

দুর্গাপুর, 27 মার্চ : শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যমেই পড়ে ঈশান ৷ সেও ঠিক করেছিল কোন বইয়েতে কী রঙের মলাট দেবে, কোন বইয়ে কোন কার্টুনের নেমপ্লেট লাগাবে ৷ সে এবার প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছে ৷ মায়ের কাছে রামায়ণের গল্প শুনলেও এবার প্রথম বইয়ে পড়তে পারবে বলে খুবই উত্তেজিত ছিল সে ৷ কিন্তু, তাও আপাতত বন্ধ ৷

কিছুদিন আগেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করেছে ছেলেটা ৷ ইচ্ছে ছিল সায়েন্স নেবে ৷ কিন্তু অভাবের সংসারে বই কেনার ক্ষমতা নেই বাবার ৷ বাড়িতে যে স্যার পড়াতে আসতেন, কয়েকদিন পরে প্রয়োজনীয় বই নিয়ে আসবেন বলেছিলেন ৷ কিন্তু তা আর হল কই ৷ সব কিছুতেই যে বাধ সাধল কোরোনা ৷ কোরোনা থেকে মানুষ বাঁচাতে দেশে তালা ঝুলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ যার দরুণ জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ সব কিছুই ৷

পড়ার ফাঁকে যে গল্পের বইগুলো পড়ে ফেলবে ঠিক করেছিল মেয়েটি, তা এখন দোকানেই বন্দী ৷ না পাওয়া যাচ্ছে পড়ার বই, আর না গল্পের বই ৷ বইয়ের তাক থেকে ধুলো ঝেড়ে গল্পের বইগুলো নামিয়ে ফের পড়তে শুরু করেছে ৷ কিন্তু, সেই নতুন বইয়ের গন্ধটা বড্ড মন টানছে তার ৷ উপায় নেই ৷ কবে লকডাউন শেষ হবে, তারও ঠিক নেই ৷ বই প্রেমীরা তো বটেই বিক্রি না হলে বইগুলোর কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বই দোকানিও ৷ বাজার-হাট, ওষুধ দোকান খোলা থাকলেও দোকান খোলার অনুমতি নেই বই ব্যবসায়ীদের ৷

স্থগিত রাখা হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ স্থগিত রাখা হয়েছে মাধ্যমিকের খাতা জমা দেওয়াও ৷ রাজ্য সরকারের পক্ষে থেকে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে ফল প্রকাশের দিনও স্থগিত রাখা হয় ৷ অনেক স্কুল মোবাইলের মাধ্যমেই জানিয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীদের ফল ৷ কিন্তু, আর স্কুলে যাওয়া হয়নি পড়ুয়াদের ৷ দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্রী অদ্রিজা সরকার জানায়, "খুব মন খারাপ লাগছে । এখনও হাতে নতুন বই পেলাম না । রেজ়াল্ট জানতে পারিনি । নতুন বইয়ের গন্ধ, মলাট দেওয়া, নেমপ্লেট লাগানো কোনও কিছুই নেই । এখন কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ঘরে বন্দী । মোবাইলে এবং টিভিতে কার্টুন আর খবর দেখছি ।"

দুর্গাপুর বেনাচিতিতে বইপাড়ার অবস্থাটাও একইরকম ৷ একেবারে সুনসান । অন্যান্য বছর এই সময় বইয়ের দোকানগুলোতে থাকে মানুষের লম্বা লাইন । এমনকী, মধ্যরাত পর্যন্ত অভিভাবকদের বই নেওয়ার জন্য ভিড় উপচে পড়ে দোকানগুলিতে । কিন্তু, এবার কোরোনা আতঙ্কের জেরে সেই বই পাড়াতেই এখন শুধুই নিস্তব্ধতা ৷ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার পক্ষ থেকে অনেক আগে বই পাঠিয়ে দেওয়া হলেও লকডাউনের জন্য আর দোকান খোলা হয়নি । বই ব্যবসায়ী মলয় দত্ত নিজের অভিমত পোষণ করলেন ঠিক এভাবেই,"বড় ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা । সব বই তোলা হয়ে গেছে । মহাজনকে টাকা মেটাতে হবে । ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনলাইনে রেজ়াল্ট জানিয়ে দেওয়া হলেও যেহেতু বইয়ের দোকান খোলা নিষেধ, তাই আমরা বই বিক্রি করতে পারছি না । তবে বাজারে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষের ভিড় দেখছি, তাতে বই বিক্রি না বন্ধ করলেও চলত । প্রশাসন আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করলে আমরাও ভিড় এড়িয়ে বই বিক্রি করতে পারতাম ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.