রানিগঞ্জ, 26 জুলাই : পানীয় জলের জন্য বরাদ্দ অনুদান সাংসদ তহবিলে ফেরাল রানিগঞ্জের বল্লভপুর পঞ্চায়েত ৷ এই ঘটনায় টুইটে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ৷ টুইট বার্তায় লেখেন, 'আসানসোলের মানুষ যারা আমাকে দ্বিতীয়বার নির্বাচন করেছেন, আমি তাঁদের সঙ্গে নোংরা রাজনীতি করি না ৷ এটা আমার DNA-তে নেই ৷ লজ্জার বিষয় যে, ন্যূনতম কাজের জন্যও আমাকে লড়াইয়ের পর লড়াই করে যেতে হবে ৷"
গত দু'বছর আগে বাবুল সুপ্রিয়র কাছে বল্লভপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা পানীয় জলের দাবি তোলেন । সেইসময় তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান লিখিত আবেদন করেছিলেন সাংসদকে । টাকা বরাদ্দ করাও হয় ৷ এরপর সাংসদ তহবিল থেকে দেওয়া 12 লাখ টাকা ফিরিয়ে দিল পঞ্চায়েত । জেলাশাসক জানিয়েছেন, ওই টাকার প্রয়োজন নেই বলে পঞ্চায়েতে থেকে জানানো হয়েছে । বল্লভপুর পঞ্চায়েতের এই ঘটনার কথা তুলে ধরে টুইটে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় । একদিকে জেলাশাসককে দেওয়া সাংসদের চিঠি, অন্যদিকে সাংসদকে দেওয়া জেলাশাসকের চিঠি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন তিনি ৷ লেখেন, পানীয় জল নিয়েও নোংরা রাজনীতি করছে তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার ।
বছর দুয়েক আগে বল্লভপুরে একটি কৃষি সচেতনতা শিবিরে যোগ দিতে গেছিলেন বাবুল । কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়ি যেতে দেখে ঘিরে ধরেছিলেন বল্লভপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা । বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা । প্রায় ঘণ্টাখানেক আটকে থাকে বাবুল সুপ্রিয়র কনভয় । এলাকার বাসিন্দাদের দাবি ছিল, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা ৷ বলেছিলেন, "জলের বড্ড অভাব । আপনি জলের ব্যবস্থা করে দিন ।" আবদনের পরপরই কাজ হয় ৷ তৎক্ষণাৎ নিজে বল্লভপুর পঞ্চায়েতে গিয়ে তৃণমূলের উপপ্রধান মমতা প্রসাদের সঙ্গে কথা বলেন । তখন মমতা জানিয়েছিলেন, আমাদের তহবিলে টাকা নেই ।" বাবুল উপপ্রধানকে জলের পাইপ বসানোর বিষয়টি প্রস্তাব আকারে দিতে বলেন । উপপ্রধান তা দিলে, প্রস্তাবটি সই করেন তিনি । প্রস্তাবে ছিল দামোদর নদী থেকে রঘুনাথচক পর্যন্ত 4 ইঞ্চির পাইপ ফেলার ও সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে রিজ়ারভার তৈরি করার । 4 মে চিঠিটি জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেন বাবুল । পরে দেখা যায় সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েত । জেলাশাসক তা লিখে জানান বাবুলকে । চিঠিতে লেখা রয়েছে, ওই অঞ্চলে 1 কোটি 36 লাখ টাকার জলপ্রকল্প তৈরি হবে । তাই ওই টাকার প্রয়োজন নেই ।
রানিগঞ্জের BDO তথা পঞ্চায়েতের এগজ়িকিউটিভ অফিসার অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দিন কুড়ি হল আমি এসেছি ৷ বিষয়টি আমার জানা নেই । খোঁজ নিয়ে দেখছি ।" বল্লভপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সিদান মণ্ডল বলেন, "বাবুল সুপ্রিয় কোনও টাকা জেলাশাসককে পাঠাননি । উনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন । আমাদের কাছে কোনও জলের পাইপ লাইন বা সাবমার্সিবল পাম্পের জন্য প্রস্তাব আসেনি । সেই টাকা এলে নিশ্চয় কাজে লাগাতাম ।" তিনি আরও বলেন, "বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ADDA থেকে 96 লাখ টাকার জলপ্রকল্পের কাজ হয়েছে । সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেছে লোকসভা ভোটের আগেই । মানুষ এখন জল পাচ্ছেন ।"
যদিও স্থানীয়দের তরফে জানা যায়, বল্লভপুর পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও জলকষ্ট রয়েছে । বাঁশতলাপাড়ায় ঠিকঠাক জল পাওয়া যায় না । দুষাদপাড়া, রঘুনাথচক ও পেপারমিল এলাকাতেও জলের সমস্যা রয়েছে ।