আসানসোল, 13 অগস্ট : প্রায় সাড়ে 500 কোটি টাকার বোঝা পৌরনিগমের উপর চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি । সরাসরি এমনই অভিযোগ তুললেন আসানসোল পৌরনিগমের বর্তমান প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় । এই বিপুল অঙ্কের টাকা কীভাবে মেটাবে পৌরনিগম, তা নিয়ে ঘুম ছুটেছে পৌরকর্তাদের । শুধু তাই নয়, এই টাকা মেটাতে গেলে থমকে যেতে পারে আসানসোলের উন্নয়নের কাজ । এমনও আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তাঁরা ।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি মেয়র থাকাকালীন আসানসোলে প্রভূত উন্নয়ন হয় । একদিকে সৌন্দর্যায়ন, অন্যদিকে শহরে বেশ কয়েকটি বৃহত্তর নির্মাণও হয়েছে । সেই কাজের প্রায় 550 কোটি টাকা এখনও বকেয়া পড়ে আছে বলে দাবি করেন বর্তমান পৌর প্রশাসক ।
এই বিষয়ে আসানসোল পৌরনিগমের বর্তমান মুখ্য প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আসানসোলে রবীন্দ্রভবন বা কফিহাউস, এই দুটি নির্মাণের ক্ষেত্রেই ব্যাপক গরমিল পাওয়া যাচ্ছে । রবীন্দ্রভবন সংস্কারের জন্য যে টাকা খরচ হিসাবে দেখানো হয়েছে, তাতে আরও একটি নতুন রবীন্দ্রভবন তৈরি হয়ে যেত আসানসোলে । অন্যদিকে কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি কফিহাউসের জন্য কোনও টেন্ডারই করা হয়নি । যে ঠিকাদার কাজ করেছেন তাকে কীভাবে টাকা মেটাব আমরা ? এমন উদাহরণ তো ভুরিভুরি ৷ "
আরও পড়ুন : Polo Ground : নাম বদলের বিড়ম্বনায় আসানসোলের ঐতিহাসিক পোলো গ্রাউন্ড
ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আসানসোল পৌরনিগম । কোনওভাবে আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ পেলে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক ।
যার বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির অভিযোগ সেই প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, "আমি বারবার যে প্রশ্ন তুলেছি কলকাতা বঞ্চিত করেছে আসানসোলকে ৷ টাকাই দেওয়া হয় না আসানসোল পৌরনিগমকে, তা প্রমাণিত হল । আমি মেয়র থাকাকালীন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় পৌরনিগমের চেয়ারম্যান ছিলেন । তিনি বোর্ড রেজুলেশনে সই করতেন । তাঁর সব বিষয়গুলোই জানা ।"
যদিও এই বিষয়ে অবশ্য অমরনাথবাবুর দাবি, "আমাদের বলার কোনও সুযোগ দেওয়া হত না সেই সময় পুরবোর্ডে ।"
তবে বিষয়টি যাই হোক না কেন এত বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণের বোঝা পৌরনিগমের মাথায় । আর এই বকেয়া মেটাতে গেলে আগামী দিনে আসানসোলে নতুন কোনও কাজ করা যাবে না বলে মত পৌরনিগমের একাংশের । উন্নয়ন থমকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্যরা ।
আরও পড়ুন : Migrant Labour : করোনা আশীর্বাদ ! পরিযায়ীরা ফিরে যাওয়ায় কর্মসংস্থান স্থানীয়দের